হাবিবুর রাহমান : এইগুলা বইল্লা আর কী অইব। নিজের ভাতার টাহা তুলি আতের টিপসই দিয়া। মাইয়াডারে খাইয়া না খাইয়া ফাইবেট ভারসিডি পড়াইছি। আর অহন মাইয়ার ছাখরীর লাইজ্ঞা মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরি মুক্তিযোদ্ধার সাডিফিকেড লইয়া। ছাখরী না পাইয়া মাইয়া আমার মুক্তিযোদ্ধার সাডিফিকেড ডিল মাইরা কয়, বাবা টাহার কাছে তোমার মুক্তিযোদ্ধার কোন মূল্য নাই, তখন কেমন লাগে কন? এভাবে নিজের কষ্টের কথাগুলো বর্ণনা করলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন খন্দাকার।

মেয়ে লাবনী আক্তারকে খুব ভাল ছাত্রী হয়ায় তাকে মাস্টর্স পর্যন্ত পড়ালেখা করিয়েছেন। কিন্তু এখন চাকরী পাচ্ছে না। চাকরী পাবার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকা। টাকা বিনীময় মেয়ে কে চাকরী পেয়ে দেবার ক্ষমতা নেই মহিউদ্দিন খন্দাকারের। নিজের যা অর্জিত টাকা ছিল তা দিয়ে কোন রকম মেয়েকে প্রাইেভট ভার্সিটি পরিয়েছেন। তিনি জানান, টাকা হলেই চাকরী পাওয়া যায়। নিয়োগ দেওয়ার আগেই ঠিক করা থাকে কে কে চাকরি পাবে। মেয়ে লাবনীকে ছোট থেকে মুক্তিযোদ্ধের বই কিনে দিতেন। মুক্তিযোদ্ধে নানান গল্প শোনাতেন। স্বাধীন দেশের প্রতি কি চাওয়ার ছিল এই প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দিন খন্দাকার বলেন, সোনার বাংলা গানডা হুনলে অহনো গায়ের পশম খাড়ায়া যায়। অহন দেশের যা অবাস্থা তার লাইজ্ঞা তো আর যোদ্ধ করিনাই। যারা দেশের লাইজ্ঞা যোদ্ধ করছে তাগো কোন মূল্য নাই। মুক্তিযোদ্ধার সাডিফিকেড দিয়া কি হইবো যদি সাডিফিকেডের কোন মূল্য না থাকে।

তার মতে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধদের জন্য অনেক কিছু করেছেন কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সাথের অনেকেই চায় না মুক্তিযোদ্ধদের জন্য কিছু হোক। বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন খন্দাকার থাকেন গুলশানের ভাটারায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযোদ্ধের টেংনিং করতে চলে যায় ভারতে। একুশ দিন টেংনিং করার পর বন্ধু আমজাদ আলী, রমিজ উদ্দিনের সাথে যোদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

(এইচবি/এইচআর/ডিসেম্বর ০১, ২০১৫)