শরীয়তপুর প্রতিনিধি : আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত মেয়র প্রার্থী আব্দুল মান্নান হাওলাদারকে পরিবর্তন করে দলের অপর নেতা আবুল বাশারকে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে গণবিক্ষোভে ফেটে পরেছে ভেদরগঞ্জ পৌরসভার হাজারো জনতা।

দলীয় এক বর্ধিত সভায় যোগ দিতে এলে বিক্ষুব্ধ জনতা স্থানীয় নাহিম রাজ্জাককে সড়কের উপর তার গাড়ি থামিয়ে তাকে ঘিরে ধরে, অবরুদ্ধ করে মনোনয়নপ্রাপ্ত মান্নানকে পরির্তনের দাবি জানায়।

ভেদরগঞ্জ উজেলা ও পৌরসভা আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা যায়, এবছর ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের জন্য স্থানীয়ভাবে তৃণমূল আওয়ামীলীগের বেশীরভাগ নেতাকর্মী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বেপারীর নাম প্রস্তাব করে প্রথমে শরীয়তুপর জেলা কমিটির কাছে এবং পরে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু দলীয়ভাবে অভিযোগ উঠেছে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মান্নান বেপারীর পরিবর্তে বর্তমান মেয়র মান্নান হাওলাদারকে মনোনয়ন প্রদান করা হয়। এই মনোনয়ন ভেদরগঞ্জ আ‘লীগ প্রত্যাখান করে গত ৩ ডিসেম্বর উপজেলা আ‘লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবুল বাশার চোকদারের নামে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামীলীগ ও অংগ-সহযোগি সংগঠনের সিংহভাগ নেতাকর্মী।

মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের এক দিন আগে শনিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে দলীয় এক বিশেষ বর্ধিত সভায় যোগদিতে এলে সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখা অন্তত চার হাজার নারী পুরুষ নাহিম রাজ্জাকের গতিরোধ করে ৪০ মিনিট পর্যন্ত বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। তারা দুর্নীতিবাজ মেয়র মান্নান হাওলাদারের মনোনয়ন বাতিল করে আবুল বাশারের পক্ষে নতুন করে মনোনয়ন প্রদানের দাবি জানায়। এসময় শরীয়তপুর-ভেদরগঞ্জ সড়কে তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত হাজার হাজার নারী পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বেপারী, সহ-সভাপতি আব্দুর জাব্বার, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন তালুকদার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হারুন অর রশিদসহ অসংখ্য নেতা কর্মীরা বলেন, ২০১১ সালের নির্বাচনে মান্নান হাওলাদার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নির্বাচন করেছিল। তিনি কালো টাকার ছড়িয়ে, বিএনপি-জামায়াতের সাথে আতাত করে মেয়র নির্বাচিত হয়ে এলাকায় কোন কাজ করেনি। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা চেক জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে।

পৌরসভার জন্য জমি ক্রয় করে সেখানেও লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করেছে। সর্বোপরী তার জন্য দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এবছরও ৭৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিছু অসাধু নেতার সহায়তায় তিনি দলীয় মনোনয়ন ক্রয় করে নিয়েছে। আমরা তাকে ভোট দিব না। আমরা নৌকার মাঝি পরিবর্তন করে আবুল বাশারকে নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হবো ইনশ আল্লাহ।

শরীয়তপুর-৩ আসনের সাংসদ নাহিম রাজ্জাক বলেন, আওয়ামীলীগ অর্থের বিনিময়ে কারো কাছে সনোনয়ন বিক্রি করেনা। দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতেই মেয়র মান্নান হাওলাদারকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

(কেএনআই/এএস/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৫)