মাদারীপুর প্রতিনিধি : ব্যাপক কর্মী সমাগমের মধ্য দিয়ে মাদারীপুর কালকিনি পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে উপজেলার দলীয় কার্যালয়ে নির্বাচনী বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কালকিনি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জি.এম দেলোয়ার হোসেন দুলালের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকী বলেন, ‘পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নের ব্যাপারে যে ভুল হয়েছে তা মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের হয়েছে। আর পৌর নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় আহ্বায়ক যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন যেহেতু কালকিনিতে জামায়াত ও বিএনপি’র কোন প্রার্থী নেই। সেহেতু নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেয়া হতে পারে। আর এ বিষয়টি আপনাদের জানানোর জন্যই আজ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদার বিশেষ অতিথির বক্তেব্যে বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিটিং করতে দেবেনা। হকস্টিক ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মারমুখী অবস্থানে ছিল পুলিশ। ওসি সাহেব আপনার উদ্দেশ্যে বলতে চাই- যার ভাই কালকিনি পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক, যার ভাই জামায়াত নেতা, তার পক্ষ নেন আপনি তাহলে কালকিনি আওয়ামী লীগের নের্তৃবৃন্দ মেনে নেবে না।

প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ থেকে গণপদত্যাগ করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হবে আপনার কৃতকর্মের কথা। আজ আপনার আচরণে পক্ষপাতিত্বের প্রমাণ মিলেছে। আপনার জানা দরকার আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক। যাদের আর্মি, বিজিবি, পুলিশ ও বন্দুকের ভয় দেখিয়ে দাবিয়ে রাখা যাবে না। অর্থ, ক্ষমতা, ভয় ও প্রলোভনে পরার পাত্র কালকিনি আওয়ামী লীগের নের্তৃবৃন্দ নয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম ফারুক বলেন, ‘যারা দুর্নীতি করে, যারা আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে, যারা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বিধা বিভক্তির সৃষ্টি করে তাদের সাথে কোন আপোষ নয়।

আমরা যাকে বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছি মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগ ভৌতিকভাবে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু কালকিনি পৌরবাসীর উন্নয়নের কথা ভেবে এবং ভবিষ্যৎ আওয়ামী লীগের কথা বিবেচনা করে আমরা তা মেনে নেইনি। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সাথে যারা প্রতারণা করেছে আমরা তাদের সাথে নেই। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে রাজপথে থেকে রাজনীতি শিখেছি। আমরা ভয় পাওয়ার পাত্র নই। প্রয়োজনে আন্দোলনে কালকিনির রাজপথ অচল করে দেয়া হবে।’

সভায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান হাওলাদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ তারেক, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বাকামিন খান, সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন ফকির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে রাজপথে মিছিল প্রদর্শণ করা হয়।

উল্লেখ্য, দলীয়ভাবে তৃনমূল পর্যায়ে কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আবুল কালাম আজাদের নাম লিখে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে জেলা কমিটি কাউকে না জানিয়ে একক সিদ্ধান্ত মতে তাদের পছন্দের প্রার্থী কালকিনি পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ইমারত হোসেন হাওলাদারের ছোট ভাই বর্তমান মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদারের নাম কেন্দ্রে প্রস্তাব করে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। এতে করে উপজেলা আওয়ামীলীগে চলছে নানা বিভেদ।

(এএসএ/এএস/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৫)