নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাটে মৎস সংরক্ষন আইন মানা হচ্ছে না। আত্রাই নদীতে উম্মুক্ত জলাশয়ে মাছের  অভয়ারণ্যে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মৎস শিকারের মহোৎসব চলছে। আর বে-আইনীভাবে এসব মৎস্য নিধন চলছে উপজেলা মৎস্য অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে।

যথাসময়ে ওই অফিসে যারা বখশিস পৌঁছাতে পারেনা, ঠিক তাদেরই জাল দড়ি কাটা জব্দ ও মামলার হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার চকশিমুলতলি ও বেড়িতলায় মাছের অভয়ারণ্যে প্রভাবশালীরা রীতিমত মাছ শিকার অব্যাহত রেখেছে। উম্মুক্ত জলাশয়ে প্রভাবশালীদের দাপটের কাছে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা বাস্তুহারা দরিদ্র সাধারন মানুষ মাছ শিকার করতে পারছেন না।

রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে এলাকার প্রভাবশালী ইয়াছিন, সহরত, রহমান, আয়জান, রোস্তম, রমজান, সুবিনাত, হাফি, আক্কাস, মোকলেছ, রশিদ, আইজুল, রাতারাতি অবৈধ উপায়ে কারেন্ট জাল, ভাঁদাই জালসহ বিভিন্ন ফান্দি দিয়ে পোনা থেকে ছোট বড় মাছ নিধন করে হাটে বাজরে বিক্রি করছে। স্রোতহীন পানির গতিতে নদীর বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে কচুরিপানা, ডালপালা ফেলে ঘের দিয়ে রাতারাতি লাখ লাখ টাকার মাছ মেরে মেসি, নসিমন, করিমন যোগে নজিপুর ও জয়পুরহাট সরবরাহ করা হয়।

প্রতি বছর একই ভাবে তারা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় নকল জেলে সেজে সরকারের কোটি কোটি টাকার মৎস সম্পদ লোপাট করে খাচ্ছে। এতে তাদের কাছ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের রাঘব বোয়লরা নদীর পাড়ে বসে থেকে মাছ ও টাকার ভাগ পাচ্ছেন।

শিমুলতলি থেকে উত্তরে ২কি.মি. স্রোতহীন জলাশয়ে ৫০-৬০টি মাছের অভয়ারণ্যে জাল ফেলে মাছ লুটপাট করছে টাউট ব্যক্তিরা। আত্রাই নদীতে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবাধে পোনা মাছ নিধন করায় হাটে বাজারে বড় মাছ দেখা মেলে না। বহু প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি ঘটেছে।

কারেন্ট জাল ,খনা, মশারি, জাল দিয়ে অবাধে রেনু পোনা মাছ নিধন করায় মাছের ভরা মৌসুমেও হাটবাজার গুলোতে ২-৩ প্রজাতির ছোট মাছ ছাড়া বড় মাছের দেখা নেই। চিতল, পাঙ্গাস, রুই, আইকর, মৃগেল, কাতল, পাবদা, চিংড়ি বাইম, আইড়, বাগার, ও নলা ঢেলা বিলুপ্ত হয়েছে। ওইসব অসাধু মৎস্য শিকারী প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজস করে সারা বছর নিষিদ্ধ জাল দিয়ে ডিমওয়ালা, পোনা মাছ নিধনসহ বাঁশের ঘের দিয়ে সেচ দিয়ে মাছ নিধন করে থাকে।

কয়েক জন মৎস্য শিকারি জানান, উপজেলা মৎস্য অফিস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, মেম্বার,ও রাজনৈতিক লোকদেরকে মাছ ও টাকার ভাগ দিতে হয়। উপজেলা মৎস কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেবনাথ আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, ওইসব অবৈধ মৎস্য শিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

(বিএম/এএস/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৫)