হেদায়েত উল্লাহ, নিউ ইয়র্ক : নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ কনসুলেটের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান বলেছেন, প্রবাসে বেড়ে উঠা শিশু-কিশোরদের মাঝে বাংলা সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে অভিভাবকদের উদ্যোগী হতে হবে। শিশুদের প্রথম বাংলা ক্লাস শুরু হোক নিজেদের ঘর থেকে। আগে নিজেদের ঘরে শিশুদের সঙ্গে বাংলায় কথা বলার চর্চা করতে হবে।

গত রোববার ম্যানহাটন বাংলা-সাংস্কৃতিক স্কুলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা বাংলা প্রেস।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো সকল অভিভাবকের কর্তব্য। অভিভাবকরা চেষ্টা করলেই খুব সহজেই নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশু-কিশোররা তাদের স্কুলে গিয়ে প্রথমে ইংরেজিভাষা দিয়েই শিক্ষা গ্রহন শুরু করে, কিন্তু বাংলা ভাষার চর্চা ও দেশীয় সংস্কৃতি শেখানোর জন্য প্রত্যেক অভিভাবকদের উদ্যোগী হতে হবে। তা নাহলে অনায়াসেই বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি থেকে বঞ্চিত হবেন আমাদের এ প্রজন্ম। প্রবাসে শত ব্যস্ততার মাঝেও শিশু-কিশোরদের জন্য যারা ভাষা ও সংস্কৃতি শেখার উদ্যোগ নিয়ে থাকেন তা সত্যিকার অর্থে একটি মহতি উদ্যোগ। তারা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।

কনসাল জেনারেল বলেন, নিউ ইয়র্কের অন্যান্য স্থানের চেয়ে ম্যানহাটন শহরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বসবাস কম। তারপরও যে পরিমান বাংলাদেশি রয়েছেন তাদের সন্তানদের কথা চিন্তা করে ইউএসএ বাংলাদেশি অর্গানাইজেশন ও শিল্পকলা একাডেমির ম্যানহাটন বাংলা-সাংস্কৃতিক স্কুল প্রতিষ্ঠার এ উদ্যোগ প্রবাসীরা চিরদিন স্মরণ রাখবে। কনসাল জেনারেল শামীম আহসান এনডিসি বলেন, বাংলাভাষা ও সংস্কৃতিচর্চার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরারও আহবান জানান স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে। সুযোগ দিলে তিনিও মাঝে মধ্যে স্কুলে এসে শিশুদের ক্লাস নেওয়ার আশা প্রকাশ করেন। এরপর তিনি নিউ ইয়র্কের ষ্টেট সিনেটর প্রেরিত সাইটেশন তুলে দেন স্কুলের পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তাদের হাতে।

ম্যানহাটন বাংলা-সাংস্কৃতিক স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিকা রায়ের সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্কুল পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ মাহবুব, সাংবাদিক ও গীতিকার জীবন চৌধুরী, কবি ও লেখক এবিএম সালেহ উদ্দিন,সঙ্গীতজ্ঞ নাদিম আহমেদ, আইনিজীবি মোহাম্মদ এন মজুমদার, অ্যাড.মজিবুর রহমান, সংঙ্গীতশিল্পী শান্তনু ভৌনিক, আবাসন ব্যবসায়ী ও সংস্কৃতিসেবী আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ সোসাইটির সা.সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার ও কাজী আশরাফ হাসান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন একাডেমির শিল্পীবৃন্দ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিশুশিল্পী সুমাইয়াহ সুখ। এরপর স্কুল কমিটির সদস্যরা অতিথিদের ফুল দিয়ে অভর্থনা জানান।

শেষে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কলকাতার জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী শান্তনু ভৌমিক, কৌশলী ইমা, খায়রুল ইসলাম সবুজ, মিলন রায় ও মোহর খান। শিল্পীদের তবলায় সঙ্গত করেন বিশিষ্ট তবলাবাদক খুশবু আলম। শব্দযন্ত্র পরিচালনা করেন লিটন।

(এমএইচএম/এইচআর/ডিসেম্বর ১১, ২০১৫)