মাদারীপুর প্রতিনিধি : মুক্তিপণ না পেয়ে মালয়েশিয়ায় বসে কালকিনির দুই যুবককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাতে মালয়েশিয়ার একটি পাহাড় থেকে নিহতদের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে ঐ দেশের পুলিশ। শনিবার সকালে নিহতের পরিবার এমন অভিযোগ করেছে।

এ ঘটনায় টেকনাফ থেকে আনসার উল্যাহ (২৭) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭ এবং মালয়েশিয়া থেকে ইউনুস ও সাকের নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে সে দেশের পুলিশ ।

পারিবারিক, স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে বিজয় খান (২৫) ও একই উপজেলার সিডিখান গ্রামের চুন্নু খানের ছেলে রাসেল খানকে (৩০) সহজ শর্তে মালেশিয়া নিয়ে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মুক্তিপণের পুরো টাকা না দেয়ায় তাদের হত্যা করে মালয়েশিয়ার একটি পাহাড়ে লাশ ফেলে রাখে। এ ঘটনায় নিহত রাসেলের বাবা মালয়েশিয়া প্রবাসী চুন্নু খান ঐ দেশে একটি সাধারণ ডায়েরী ও বিজয়ের বাবা শাহজাহান খান বরিশালের গৌরনদী থানায় একটি মামলা করেছেন।

নিহতের পরিবারের দাবী, তাদের আটকে রেখে ইউনুস ও সাকের নামে দুই ব্যক্তি মুক্তিপণ দাবী করে ইসলামী ব্যাংক টেকনাফ শাখায় (হিসাব নং-২১৩৩৮) জমা দিতে বলে। তাদের কথা মতো নিহতের পরিবার মুক্তিপণ বাবদ ইসলামী ব্যাংক গৌরনদীর টরকী বন্দর শাখায় ৫ লাখ টাকা জমা দেয়া হয়। কিন্তু পুরো টাকা না দেয়ায় তাদের হত্যা করে।

এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা দায়ের করলে ব্যাংক হিসাব নম্বরের সূত্র ধরে র‌্যাব-৭ অভিযান চালিয়ে টেকনাফ থেকে আনসার উল্লাহকে (২৭) গ্রেফতার করে।

এছাড়াও মালয়েশিয়া থেকে ইউনুস ও সাকের নামে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে ঐদেশের পুলিশ।
এ খবরে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তারা লাশ বাংলাদেশে আনাসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে।

নিহতের পরিবার জানায়, মুক্তিপণের টাকা ইসলামী ব্যাংক টেকনাফের শাখায় ২টি একাউন্টে নেয়া হয়। তার সন্ধান করেই হোতাদের গ্রেফতার করা হয়।

নিহত বিজয়ের বাবা শাহজাহান খান জানান, ঘটনায় মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে গ্রেফতাররা সবাই রোহিঙ্গা। তিনি সরকারের কাছে লাশ দ্রুত দেশে আনার দাবী জানান।

এ ব্যাপারে কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, নিহতদের পরিবারের লোকজন আমার কাছে এসেছিল। তারা মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকা ইসলামী ব্যাংক টেকনাফের শাখায় জমা দিয়েছেন ইসলামী ব্যাংক গৌরনদীর টরকী বন্দর শাখার মাধ্যমে। জানতে পেরেছি সেখান থেকে ক্যাশ করা হয়েছে। ঘটনাটি বিদেশের তবুও আমার যতটুকু করণীয় তা করেছি। আমি গৌরনদী ও টেকনাফ থানার ওসিকে বলে দিয়েছি, তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন।

(এএসএ/এইচআর/ডিসেম্বর ১২, ২০১৫)