গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক যুদ্ধাপরাধীদের গুপ্ত হামলাকারী উল্লেখ করে বলেন, গুপ্ত হামলা বন্ধ করে রাজপথে মোকাবেলা করুন।

কাপুরুষেরা গুপ্ত হামলা চালায়। তারা কোন উপায় না পেয়ে মসজিদে-মন্দিরে ককটেল আর বোমা হামলা করে এদেশকে পাকিস্তান–আফগানিস্তান বানাতে চায়। আমরা তা হতে দিতে পারি না। তাই হুশিয়ারী দিয়ে তাদের বলে দিতে চাই এবার শুধু বিষ দাঁতই ভেঙ্গে দেয়া হবে না, ধরতে পারলে মাথাও ছেচেঁ দেয়া হবে।

তিনি আজ শনিবার দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জনতার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করায় পাকিস্তানের পার্লামেন্টে মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কথা বলা হয়েছে তাতে বাংলাদেশে না কি কোন মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। কোন মা-বোন ধর্ষিত হয়নি। যুদ্ধাপরাধীদের শুধু বিচার নয়, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। সেসব সম্পদ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে। ৭১ এর পরাজয়ের গ্লানি আজও তারা ভুলতে পারেনি। তাদের স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করা হবে। আইন না থাকলে নতুন আইন করে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীর দল জামায়াতে ইসলামীর এদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। অচিরেই তাদের রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হবে। তাদের রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।

জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, জিয়উর রহমান মুজিবনগর সরকারের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করতে চায়নি।

সে ইউনিয়ন করে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলো। জিয়া তার সঙ্গিদের নিয়ে ভারতে বসে পাকিস্তানের সাথে আপোষ করতে চেয়েছিলো।বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের নিরাপদে দেশ ত্যাগের ব্যবস্থা করেছিলো। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাস করে সে বঙ্গবন্ধুর বিচার বন্ধ করে রেখেছিলো। যুদ্ধাপারাধী আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে রাষ্ট্রপতি ও শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে ছিলো। এ সব অপকর্মের জন্য জিয়াউর রহমানেরও মরণোত্তর বিচার করা হবে।

মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন কল্যাণের কথা উল্লেখ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের ভাতা ১০ হাজার করা হয়েছে। আগামী ঈদ থেকে তাদের দুইটি করে বোনাস দেয়া হবে। আর আগামী জুন মাস থেকে মু্িক্তযোদ্ধাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি করা হবে। তাদের টাকা দিয়ে ওষুধ কেনা লাগবে না।

কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলরের কমান্ডার মোঃ এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে উপজেলার বদ্ধভূমি সংলগ্ন রেলওয়ে ময়দানে অন্যান্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমান্ডের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা ইসমত কাদীর গামা, সহ-সংগঠনিক সম্পাদক এস এম মজিবুর রহমান, সদস্য মিয়া মুজিবুর রহমান, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, যুদ্ধকালিন কমান্ডার ক্যাপ্টেন নুর মোহাম্মদ বাবুল, গোপালগঞ্জ জেলা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোক্তার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা এস এম মোহসীন আলী, খান ওয়ালিউল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মশিউর রহমান খান, খালিদ হোসেন লেবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

(এমএইচএম/এএস/ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫)