ন্যাকরোসিস

স্কাইস্ক্র্যাপারের কাঁচ হতে অনর্গল ঝরে পড়ে ক্যালিগুলার নিঃশ্বাস বাষ্পতাপ। উড়তে উড়তে হঠাৎ ডানার আঁচলে টের পাই মেঘফোয়ারার ফুটো দিয়ে অবিশ্রান্ত গড়িয়ে যাচ্ছে তোমার মুখ। ফুরফুরে বাতাসে মিশে যাচ্ছে নিওডার্থাল ফসিলের মত। জল বিহারী ধানীজমিনের প্রতি অন্ধকৃষক পুত্রের আকুতি জমতে থাকে পালকে- পালকের শরীরে প্রস্ফুটন পর পরাগ স্মৃতির মত থরে থরে। চৌরাস্তায় মশাল, পরিচিত শহরের বেশভূষা, দু’তিনটে দশটা-পাঁচটা এদিক ওদিক উঁকি ঝুঁকি মেরে আবার মুখ লুকোয় খোলসে।

তখন আমি পেরিয়ে এসেছি ওলট মেঘ তুলোট মেঘ। আমার চুলের পাশে কণা কণা তুষার। সাঁই সাঁই উড়ে চলে কোঠাবাড়ি আঙিনা মজলিশ স্কুল গোলপোষ্ট আর রাতবিহারী গার্হস্থ্য পুরুষের কামুক দীর্ঘশ্বাস। বারুদগন্ধী কোলাহল বেসামাল মাতালের মত গোঙায়, ছিন্ন বিলাপোত্তর ক্রন্দনকথা মরু জ্যোৎস্নার মত একাকী পুড়তে থাকে অথৈ খরায়।

তোমার মুখ,

আহা! তোমার মুখ স্বপ্নদৃশ্যের ত্রস্ততায় বল্গা হরিণের দ্যুতিমেখে আমাকে ভেঙচি কাটতে কাটতে এ ঘরে লুকোয়, ও দোরে খিল আঁটে।

আমি টোটেমহীন শাপগ্রস্ত জনপদের মত নিশ্চিহ্ন হতে থাকি ক্রমউড্ডয়নে...

নানাবিধ দৃষ্টিপাত

অশ্বখুরের পৃথিবী কিংবা জলপোকার- বস্তুত এইসব বিবিধ ভাবনার তরল প্রক্ষেপণ। আমাদের চোখ অন্ধ করে যেইসব সরীসৃপ খেয়ে গেছে অজস্র ভাঁড়ার, মহাকাল তাদেরকে কুশলে রাখুক, বেঁচে বর্তে থাকুক যাবতীয় ধোঁকাকাল।

সে ভাবনায় থিতু হতে হতে, একটি আদিম অন্ধকারে ঠেসে যাবার আগে আমাদের দৃষ্টিতে আটষট্টি রকম রঙ হুমড়ি খেয়ে, থুতনি নেড়ে বলে, জীবন মানে, বাপু, হুহ হু? অতঃপর দীর্ঘশ্বাস, দুটি ঝিঁ ঝিঁ গান, এক রাত্রি হাঁটুতে মাথা রেখে অপেক্ষার পর কান পেতে থাকলে শোনা যায় হুহ হু এর পরে আচম্বিত আওয়াজ : কচু, ঘেচু, বাঁশ অথবা ত্রিবিধ ধুরছাই।