বরিশাল প্রতিনিধি : ’৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর সারা দেশে বিজয় পতাকা উড়লেও বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা হানাদারমুক্ত হয় ২২ ডিসেম্বর। বিজয়ের ৬দিন পরে আজকের এইদিনে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় (তৎকালীন গৌরনদীতে) বিজয় পতাকা উড়েছিল। দীর্ঘ ২৮দিন ধরে মুক্তি বাহিনী ও মুজিব বাহিনীর যৌথ আক্রমণের পর বাধ্য হয়ে এই দিন শতাধিক পাকসেনা  বর্তমান গৌরনদী সরকারী কলেজে মাঠে মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। ফলে বাংলাদেশের সর্বশেষ হানাদারমুক্ত এলাকা হয় আগৈলঝাড়া।

স্বাধীনতা যুদ্ধের ৪৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে এখনও সরকারী উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে কোন স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি। হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা সহস্রাধিক লোক হত্যা করেছিল নির্বিচারে। ৩ শতাধিক মা-বোনের ইজ্জত হারাতে হয়েছিল পাকহানাদার ও তাদের দোসরদের হাতে। এ এলাকায় সর্বপ্রথম সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, এ্যাড. আ. করিম সরদার এমএলএ’র উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা হয়। ওই দলের প্রধান ছিলেন প্রয়াত মতিয়ার রহমান তালুকদার, সহযোগী ছিলেন প্রয়াত নুর মোহম্মদ গোমস্তা। কোটালীপাড়ার হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠন করা হয় পৃথক বাহিনী। যা পরবর্তিতে হেমায়েত বাহিনী নামে পরিচিতি লাভ করে। হেমায়েত ও তার বাহিনী আগৈলঝাড়া-রামশীল-পয়সারহাট-সিকিরবাজার এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করেন। সর্বশেষ মুজিব বাহিনীর একটি দল ভারত থেকে ট্রেনিং শেষে আগৈলঝাড়ায় এসে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক চিফ হুইপ ও বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লুাহ। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন রকিব সেরনিয়াবাত, ফজলুর রহমান হাওলাদার ও মেজর শাহআলম তালুকদার। বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে আত্মসমর্পণ করলেও এ এলাকায় পাকসেনারা দীর্ঘ ২৮দিন যুদ্ধের পরে ২২ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। সেই থেকেই২২ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

(টিবি/এইচআর/ডিসেম্বর ২১,২০১৫)