বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাট পৌরসভার ৫৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সাধারণ কাউন্সিলর পদে পরিচিত দুই নারী নেত্রী সরাসরি পুরুষদের সাথে প্রতিদ্বন্ধীতায় করে গোটা জেলায় সোরগোল ফেলে দিয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে এই দুই নারী প্রার্থীকে নিয়ে ভোটারদের মাঝে উৎসাহের কোন কমতি নেই।

এই দুই কাউন্সিলর প্রার্থী হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের হাসিনা রহমান (৪৫) এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নার্গিস আক্তার ইভা (৩৫)। দুজনই এসএসসি পাশ এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাসিনা রহমান বাগেরহাট পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নার্গিস আক্তার ইভা বাগেরহাট পৌর মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। তারা সমান তালে তাদের নিবাচনী প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে এই দুই নারী প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

বাগেরহাট পৌরসভার ৫৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সাধারণ কাউন্সিলর পদে দুই নারী নেত্রীর অংশ গ্রহনের বিষয়ে পৌরসভার বর্তমান মেয়র খান হাবিবুর রহমান জানান, বাগেরহাট পৌরসভায় এই প্রথম কোনো নারী সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হলেন। এটা ব্যতিক্রমী ও তাৎপর্যপূর্ণ। এই প্রার্থীরা বাগেরহাট পৌরসভার ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায় রচনা করেছেন। বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ কমল কুমার ঘোষ এই দুই নারী সাধারণ কাউন্সিলর পদে পুরুষ প্রার্থীদের সাথে প্রতিদ্বন্ধীতা করা কে দেখছেন ইতিবাচক দৃষ্টিতে।

বাগেরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ‘পাঞ্জাবি’ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বাগেরহাট পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিনা রহমান। তার প্রতিদ্বন্দ্বি তিন পুরুষ প্রার্থী। পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিনা রাজনীতির পাশাপাশি মহিলা পরিষদ, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। একটি বেসরকারি সংস্থার চাকরিজীবীও তিনি। হাসিনা রহমান বলেন, এই এলাকা আমার জন্মস্থান ও শ্বশুরবাড়ি। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

এই ওয়ার্ডে সন্ত্রাস, মাদক ও নাগরিক অসুবিধা দূর করতে এলাকাবাসীর অনুরোধে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের ওয়ার্ড পৌরসভার উত্তর প্রান্তে। এখানে নিম্ন ও প্রান্তিক আয়ের মানুষের বসবান বেশি। এলাকায় পানি বা বিদ্যুতের মতো নাগরিক সুবিধাগুলো নিশ্চিত করা দরকার। বিগত সময়ে এই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা মানুষের আশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। সেকারনে আমাকে প্রার্থী হতে হয়েছে। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। একজন কাউন্সিলর প্রার্থী তার কর্মীদের গণসংযোগ না চালানোর জন্য হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন এই কাউন্সিলর প্রার্থী। বিষয়টি প্রমাণ করার তেমন সুযোগ নেই বলে কোথাও নালিশ করেননি বলে তিনি জানান।

আরেক প্রার্থী বাগেরহাট পৌর মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নার্গিস আক্তার ইভার প্রতীক ‘টেবিল ল্যাম্প’। বাগেরহাট পৌরসবার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তার প্রতিদ্ব›দ্ধী পাঁচ পুরুষ প্রার্থী। এই নারী নেত্রী ইভা জানান, আমার পারিবারিক পিছুটান কম। মানুষের মধ্যেই আমার সময় কাটে।

এলাকার নারীদের অসংখ্য সমস্যা রয়েছে। কিন্তু তারা পুরুষ কাউন্সিলরদের কাছে তাদের সমস্যা জানাতে পারেন না। এই বিষয়টি দেখে আমি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী হয়েছি। ইভার দৃষ্টিতে পানির অভাব তার এলাকার একটি বড় সমস্যা। নির্বাচিত হলে তিনি পানি সমস্যার সমাধানে ‘আপ্রাণ’ চেষ্টা করবেন বলে জানান।

এলাকার নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনিও জয়ের ব্যাপারে দারুন আশাবাদী বলে জানান। আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাগেরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে এই দুই নারী প্রার্থীসহ ৩৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

(একে/এএস/ডিসেম্বর ২১,২০১৫)