রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের আন্দোলনের মুখে শীতকালীন অবকাশে হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছে প্রশাসন। রবিবার টানা ৬ঘন্টা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবরোধ থাকার পরে বিকেল ৫টার দিকে হল খোলা রাখার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটকসহ সকল ফটকে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, হল খোলা রাখার দাবিতে রোববার সকাল থেকে বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন ভবনের গেট বন্ধ করে সেখানে অবস্থান নেন তারা। হল বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে তারা।


প্রশাসন ভবনের সমানে সমাবেশে বক্তব্য দেন রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য সাইদুল ইসলাম রুবেল, রাবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউসার আহমেদ কৌশিক, রাবি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি মামুনুর রশীদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের ছুটিতেও হল খোলা রাখা হয়। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অল্প দিনের ছুটিতেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হয়। অনেকের পরীক্ষা ও অন্যান্য কাজ থাকায় তাদের রাজশাহীতেই থাকতে হয়। ফলে তাদের বিপাকে পড়তে হয়। এতে তাদের পড়াশোনায় বিঘœ ঘটে।

এতে বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, প্রো-ভিসি, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসকসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবন আটকা পড়ে। এমনকি কোনো গেট দিয়ে কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেয়া হয়নি। ফলে ভর্তিচ্ছুসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনে আটকা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

এছাড়া দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এর ফলে ক্যাম্পাসে বাইরে থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বাস ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে আটকে আছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য হল প্রাধ্যক্ষরা প্রশাসন ভবনে ঢুকতে চাইলেও তাদেরকে বাধা দেয়া হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মধ্যস্থতায় শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান রানা প্রশাসনের সাথে আলোচনা বসতে রাজি হয়। ১ ঘন্টার মত আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের পূর্বের অবস্থান থেকে পিছু হটে।

বিশ্ববিদ্যালয় হল কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর শিউলি শামিম শান্তা বলেন, বিগত সময়ের মত আমরা এবারো শীতকালীন অবকাশে হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি, কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি ও ৮ তারিখ বিসিএস পরীক্ষার কথা চিন্তা করে ভিসি স্যারের সাথে আলোচনা করে হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, শীতকালীন অবকাশের জন্য আগামী ১ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাশ-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। ছুটিতে ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন।

(আইএইচএস/এইচআর/ডিসেম্বর ২৭, ২০১৫)