পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : জাতীয় সংসদের স্পীকারের সংসদীয় আসন রংপুর-৬, পীরগঞ্জে দু’শতাধিক মাইকে প্রচার করে লটারীর টিকেট বিক্রি চলছে। ওই লটারীর ড্র’ ফলাফল সরাসরি স্থানীয় একটি ডিস চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে ও মোড়ে চেয়ার বসিয়ে ২০ টাকা করে লটারীর টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি অবগত থাকলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, উপজেলা সদরের পার্শ্বেই বালুয়াহাটে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে ৮ দিনব্যাপি নাট্যানুষ্ঠানের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ওই অনুষ্ঠান উন্মুক্ত হওয়ায় অনুষ্ঠানের খরচ মেটাতে ‘দৈনিক উল্লাস র‌্যাফেল ড্র’ নামে একটি লটারী প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত উপজেলার হাট-বাজার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে চেয়ার বসিয়ে শত শত স্থানে মাইকিং করে ২০ টাকা মূল্যের লটারী বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থী, গ্রামাঞ্চলের সাধারন মানুষ লটারীর টিকেট কিনে প্রতারিত হচ্ছে। প্রতিরাতেই উল্লেখিত লটারীর ‘ড্র’র অনুষ্ঠানটি স্থানীয় একটি ডিস চ্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।

সরেজমিনে ও অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৩’শ ৩১ টি গ্রামে গত ২৫ ডিসেম্বর ৮০টি মাইকে এবং ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর ১’শ ২০ টি করে মাইকে প্রচার করে লটারীর টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। উপজেলায় সামাজিক-ধর্মীয়সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনের জন্য মাইক পাওয়া যাচ্ছে না।

উপজেলা সদরের পীরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজ, পীরগঞ্জ আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, শাহু আব্দুর রউফ কলেজ, পীরগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার সামনে এবং থানার মোড়ে, ব্রীজের পশ্চিমে ধানমন্ডির মোড়ে, গুলশান মোড়ে, বাজার মোড়ে, বাসষ্ট্যান্ডে, জামতলা মোড়ে, সরকার জুয়েলার্সের সামনে, সোডাপীর বাজার, চতরা, ভেন্ডাবাড়ী, খালাশপীর, মাদারগঞ্জ, শানেরহাট, গুর্জিপাড়া, চাতালের বাজার, কুমেদপুর, ফুটানীর বাজার, মমিন মার্কেট (কুমারগাড়ী), সন্নাসীর বাজারসহ যত্রযত্র স্থানে লটারীর টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। গ্রামের মহিলারা সরল বিশ্বাসে লটারীর টিকেট কিনলেও সেগুলো লটারীরর ড্র’র সময় বাক্সে ফেলা হচ্ছে না বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা জানান।

এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজিমুল ইসলাম শামীমের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন- অনুমতি ছাড়াই খেলাটি চলছে। তবে বিশেষ কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে লটারী বিক্রি করা অন্যায়, আমি এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছ বলেই ক্ষ্যান্ত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে লটারীর টিকেট বিক্রি করা প্রাথমিকভাবে নিষেধ করা হয়েছে। যদি না শোনে, যে কেই হোক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারপরও উপজেলা সদরসহ শত শত স্থানে মাইকিং করে লটারীর টিকিট বিক্রি চলছে। জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

(জিকেবি/এএস/ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫)