সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার আম, দেশজুড়ে সুনাম। নামের সঙ্গে বেড়েছে  দাম।  সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা এলাকার ভ্যান চালক ফজর আলী (৬০) সাতক্ষীরার আমের প্রশংসা করতে গিয়ে ছন্দে ছন্দে এসব কথা বলেন।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সাতক্ষীরার প্রত্যেকটি বাজার ভরে গেছে আমে। ন্যাংড়া, হিম সাগর, লতা, গোবিন্দ ভোগ, মোহন ভোগ কত বিচিত্র নাম এসব আমের। মধু মাসে জৈষ্ঠ্য চলছে। চারদিকে নানা প্রকার ফলের সমাহার। আম সব ফলের রাজা। সাতক্ষীরার আম সারা দেশের মানুষের রসনায় পানি আনে। ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, চট্টগ্রামসহ গোটা দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে সাতক্ষীরার আম। খেতে সুস্বাদু, কড়া মিষ্টি, আর সুঘ্রান এ আমের অন্যতম চরিত্র। এচাড়া পাতলা খোসা, আঁশহীন, আঁটি ছোট, বলে সাতক্ষীরার আম জেলার সীমানা পেরিয়ে অন্য জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে। দেশি আমে ঠাসা সাতক্ষীরার প্রত্যেকটি বাজার। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় অপরিপক্ক আমে কার্বাইড মিশিয়ে পাকাচ্ছে। কেউ কেউ বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য স্প্রে করে আম পাড়ছে। যাতে কেউ বুঝতে না পারে। সাতক্ষীরায় আমের বড় মোকাম সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজার। বৃহষ্পতিবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেক আমের গায়ে কালো দাগ। কোন কোন আমের বোটার কাছে পচন ধরেছে। কালো দাগ ও বোটার কাছে পচন ধরার কারন জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতের কথা শোনালেও ভূক্তভোগী ক্রেতারা বলেছেন, এগুলো বিষাক্ত কার্বাইড অথবা রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে জোর করে পাকানো। বাজার ঘুরে জানা গেছে, গোবিন্দভোগ প্রতি মণ দু’ হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ন্যাংড়া ও হিম সাগর প্রতি মণ দু’ হাজার থেকে দু’ হাজার ৫০০ টাকা। লতা ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।
বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর আমের দাম একটু বেশি । গত বছর যে আম বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। এ বছর সে আমের দাম ৬০ টাকা।
সাতক্ষীরার বাজার আমে ভরে গেলেও দাম বেশি হওয়ায় তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। সাধ থাকলেও আমের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গরীব সাধারণ মানুষ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফলের চাষ হয়েছে। ফলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ হাজার ৯১৮ মে:টন। এর মধ্যে আমের চাষ হয়েছে চার হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫০ হাজার ১১৬ মেট্রিক টন।

(আরকে/এএস/মে ২৯, ২০১৪)