দিনাজপুর প্রতিনিধি :  ‘আজ আমার গায়ে হলুদ। শুক্রবারে বিয়ে। আমি এখনই বিয়ে করতে চাইনা। আমি আরো লেখাপড়া করতে চাই’। কান্না জড়িত কন্ঠে দিনাজপুর সদর উপজেলার চেহেলগাজী শিক্ষা নিকেতন স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী রুবিনা খাতুন এভাবেই তার আবেগ প্রকাশ করছিল নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট।

বৃহস্পতিবার দিনাজপুর শহরের সুইহারী খালপাড়া মহল্লার মোঃ রফিকুল ইসলামের কন্যা ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী রুবিনা (১৩) বিয়ের আয়োজন চলছিল। নাবালিকার বিয়ের সংবাদ পেয়ে স্থানীয় মহিলা পরিষদ ও বেসরকারি সাহায্য সংস্থা পল্লীশ্রীর যৌথ উদ্যোগে ঘটনাস্থল শহরের সুইহারী খালপাড়া মহল্লায় নেতৃবৃন্দ গিয়ে হাজীর হন।

নারী সংগঠনের নেত্রী শামিমা পপি, ফৌজিয়া ইয়াসমিন, মহিলা পরিষদের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা, মনোয়ারা সানুসহ নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে দিয়ে দেখেন বাড়ীর আঙ্গিনায় হলুদের স্টেজ সাজানো রয়েছে। ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী রুবিনার গায়ে হলুদ পড়েছে এবং আগামীকাল শুক্রবার দুপুরে বিয়ে পড়ানো হবে।

ঘটনাস্থল থেকে শামীম আরা বেগম সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রহমানের নিকট মোবাইল ফোনে খবর দেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ বাল্যবিবাহের কুশল নিয়ে মেয়ে ও মেয়ের বাবা-মার সাথে আলোচনা করেন। আলোচনার পর রুবিনার মা ও বাবা বলেন ‘আপা আমরা এখন মেয়ের বিয়ে দিব না। প্রশাসনের মাধ্যমে আমাদের যাতে কোন সাজা না হয়, এ ব্যাপারটি আপনারা দেখবেন’।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভুমি) এহতেশাম রেজা এবং পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাল্য বিবাহটি বন্ধ করেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় পরবর্তীতে রুবিনার ১৮ বছর পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তার সাথে কোন পাত্রের বিবাহ দেয়া যাবে না। এ সময় পাত্রের পিতা ও মাতা পরামর্শটি গ্রহণ করে বিয়েটি স্থগিত করতে সম্মত হন।

(ওএস/এস/মে ২৯, ২০১৪)