বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে শরণখোলা রেঞ্জ অফিস সামনের নদী দিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার হাই স্পীড গ্রুপ অব কোম্পানির অয়েল ট্যাংকার এম,টি মক্কা- ১ এর ধাক্কায় সুন্দরবন বিভাগের একটি কেবিন ক্রুজার সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্টীল বডি কেবিন আরো ৩টি টহল লঞ্চ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শরণখোলা রেঞ্জ অফিস সামনের পন্টুনের গ্যংওয়ে। দুর্ঘটনায় দায়ী অয়েল ট্যাঙ্কারটি আটক করা হয়েছে। এতে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করে সুন্দরবন বিভাগের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার অয়েল ট্যাংকারটির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছে। আটক ওই অয়েল ট্যাংকারটির মাষ্টারসহ ১২ জন ক্রু বর্তমানে সুন্দরবন বিভাগের জিম্মায় রয়েছেন। অয়েল ট্যাংকারটির কর্মকর্তা ও নৌযান ফেডারেশনের নেতারা গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে অয়েল ট্যাংকার এম,টি মক্কা- ১ বগী-শরণখোলা নদী দিয়ে বলেশ্বর নদীতে যাওয়ার পথে সরাসরি শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের পন্টুনে আঘাত করে।

এসময় অয়েল ট্যাংকারটির আঘাতে নোঙ্গর করে রাখা একটি ফাইবার কেবিন ক্রুজার মাঝখান থেকে সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যায়। ওই কেবিন ক্রুজারটির মূল্য ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া, স্টীল বডির এম,এল বন হরিণী-১, বন হরিণী-৪ ও আরো একটি টহল লঞ্চ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় শরণখোলা রেঞ্জ অফিস সামনের পন্টুনের গ্যংওয়ে। সবমিলে এঘটনায় সুন্দরবন বিভাগের প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে এই বন কর্মকর্তা দাবি করেন। তিনি আরো জানান, ঘটনার পর অয়েল ট্যাংকারটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। ১২ জন স্টাফসহ জাহাজটি রেঞ্জ অফিসের ঘাটে আটক রাখা হয়েছে। এঘটনায় বিভাগীয় মামলা হয়েছে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না পেলে জাহাজের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে।

অয়েল ট্যাংকারটির মাস্টার আ. কমির জানান, রেঞ্জ অফিসের সামনের বাঁক ঘোরার সময় ইলেক্ট্রিক হাইড্রোলিক ফেল করায় গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হওয়ায় এদুর্ঘটনা ঘটে।

হাই স্পীড কোম্পানীর খুলনা অঞ্চলের সুপার ভাইজার মো. আ. আজিজ জানান, চট্টগ্রাম পদ্মা ডিপো থেকে জাহাজটি তেল বোঝাই করে ৮ ডিসেম্বর খুলনা পৌঁছে। সেখানে তেল খালাস করে ঢাকায় ফেরার পথে দুর্ঘটনায় পড়ে। বিষয়টি মালিক পক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সুন্দরবন বিভাগের যে ক্ষতি হয়েছে তার পূরণ করা হবে। জাহাজ মালিক ঢাকার কেএম মাহমুদুর রহমান বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় সহসভাপতি মো. বাহারুল ইসমলাম জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনা যাতে না ঘটে সেব্যাপারে জাহাজ মাস্টারকে সতর্ক করা হয়েছে। মালিক পক্ষ বন বিভাগের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

(একে/এএস/জানুয়ারি ০৫, ২০১৬)