প্রবীর সিকদার : হবিগঞ্জে যেদিন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া নৃশংস বোমা হামলার শিকার হন, সেদিন 'যুবরাজ' তারেক রহমান গোপালগঞ্জে বিএনপির তৃণমূল সম্মেলনে ছিলেন। তারিখটি ছিল ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি। ওই দিন সন্ধ্যায় তারেকের যখন ঢাকায় ফেরার প্রস্তুতি চলছিল, তখনই হবিগঞ্জের বোমা হামলার খবর এলো।

মুহূর্তে গোপালগঞ্জ শহরে ছড়িয়ে পড়ল ক্ষোভ। সার্কিট হাউজ থেকে তারেকের গাড়ি বহর বেরিয়ে হঠাৎ করেই ঢাকার উদ্দেশে না গিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারের দিকে ছুটল। সরকারি কর্মকর্তারাও হতবাক, টুঙ্গিপাড়ায় তো কোনও কর্মসূচি নেই ! ওই রাতে তারেক টুঙ্গিপাড়ায় গেলেন এবং বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করলেন! বিস্ময়ে হতবাক গোপালগঞ্জ, তারেক বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করছেন! মুহূর্তে হবিগঞ্জের বোমা হামলার খবরে গোপালগঞ্জের ক্ষোভ স্তিমিত হয়ে গেল! আমি তখন গোপালগঞ্জে, সকাল থেকেই তারেক রহমানকে পর্যবেক্ষণ করছিলান, তিনি জেনারেল জিয়ার চেয়ে কতোটা সেয়ানা !

তারেক রহমান সরকারের কেউ ছিলেন না, কিন্তু ওই তৃণমূল সম্মেলনে দেখেছি তাকে প্রধানমন্ত্রীর সমান প্রটোকল এনজয় করতে। এটা কী করে সম্ভব ! তার তৃণমূল সম্মেলনে ৬/৭ জন মন্ত্রী হাজির থাকতেন। ওই মন্ত্রীদের টোটাল সরকারি প্রটোকল এনজয় করতেন তারেক ! জিয়ার চেয়েও কম ধুরন্ধর ছিলেন না তারেক !

আজ হঠাৎ করেই বিক্ষিপ্তভাবে ওই দিনের কথা মনে পড়ছে। হবিগঞ্জে বোমা হামলার শিকার শাহ কিবরিয়া। গোপালগঞ্জে হাজির তারেক। বোমা হামলার খবরে শহরে উত্তেজনা। হঠাৎই গন্তব্য পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর মাজারে তারেক ! মুহূর্তে ক্ষোভ প্রশমন করে দ্রুত তারেকের ঢাকা যাত্রা ! হবিগঞ্জে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ওপর বোমা হামলা আর বঙ্গবন্ধুর মাজারে তারেক! এই দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র নেই তো!