স্টাফ রিপোর্টার : আগামী বাজেটে তামাকের ওপর কর বাড়ানোর আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। এ সময় তিনি আরো বলেন, 'বিড়ি ফ্যাক্টরি বন্ধ হলে বেকারত্ব কিছুটা বাড়লেও সমাজ ও দেশ সামগ্রিকভাবে উপকৃত হবে।'

শুক্রবার সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা মানস আয়োজিত প্রেসকনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।

এদিকে, আগামী বাজেটে বিড়ি-সিগারেটসহ সকল তামাকজাত পণ্যের ওপর কর বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক সেমিনারে তামাকবিরোধী জোটের নেতারা এ দাবি জানান।

সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, 'টেক্স বৃদ্ধির মাধ্যমে কতটুকু তামাক ব্যবহার কমবে, তামাকসেবীর সংখ্যা কতটুকু কমবে, তার থেকেও আমি মনে করি এই তামাক ব্যবহারের ক্সেত্রৈ নিরুৎসাহিত করার জন্য এই টেক্স বৃদ্ধি করা প্রয়োজন আছে। রাজনীতি বলেন আর সুশীল সমাজ বলেন, দেশের গণমানুষ বলেন-এর সম্পর্কে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে।'

সেমিনারে বক্তারা বলেন, এ দেশে এক টাকায় তিনটি বিড়ি পাওয়া যায়, অথচ এতো সস্তায় বাচ্চাদের চকলেটও পাওয়া যায় না। তামাকের ওপর এমনভাবে কর বাড়ানো উচিত যাতে করে তামাক পণ্যের দাম নিশ্চিতভাবে বাড়ে। এতে নতুন ধূমপায়ী কম তৈরি হবে এবং ধূমপান ত্যাগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে, ভর্তুকি কমবে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতেও। বিগত কয়েক বছরে মুদ্রাস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনায় আনলে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ওপর কার্যত কর বাড়েনি। যেসব দেশে সস্তায় তামাক পাওয়া যায়, বাংলাদেশ সেসব দেশের তালিকায় শীর্ষস্থানে আছে।

সেমিনারে সংগঠক মোজাজফর হোসেন পল্টু বলেন, 'তামাকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কথা বলতে হবে। এখানে আপোসের কোনো সুযোগ নেই। যারা তামাক নিয়ে আন্দোলন করে তাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে হুমকি দেওয়া হয়। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে।'

তামাক বিরোধী সংগঠন মানবিকের উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, 'তামাকের বিরুদ্ধে প্রচারণায় টোবাকো কোম্পানিগুলোবাধা দেয়। গণমাধ্যমকেও তারা ‘ম্যানেজ’ করে ফেলে।'

আলোচনা অংশ নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন বলেন, 'আইনের দুর্বলতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে তামাকবিরোধী আইন কার্যকর করা যাচ্ছে না। তামাকের ওপর কর না বাড়ানো জন্য সংসদ সদস্যরা এনবিআরকে জিও চিঠি দেন এটা খুবই দুঃখজনক।'

সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক লোক তামাক ব্যবহার করে। তামাক ব্যবহারের পরিণতি হিসেবে প্রতিবছর বাংলাদেশে ৩০ বছরের বেশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫৭ হাজার লোক মারা যায়, তিন লাখ ৮২ হাজারের বেশি লোক পঙ্গুত্ববরণ করে এবং প্রতিবছর ১২ লাখের বেশি মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত প্রধান আটটি রোগে আক্রান্ত হয়।

(ওএস/এটিআর/মে ৩০, ২০১৪)