রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা কাঞ্চনপুর গ্রামে ছোট ভাইয়ের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে বড় ভাইয়ের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৩০ মে) সকালে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ আনেন মৃত সামছুল হকের পুত্র মো. মোস্তফার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বামনী ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের হজু বেপারী বাড়ির মৃত শামছুল হকের দুই পুত্র ও তিন কন্যা রেখে প্রায় এক যুগ আগে মারা যায়।

ছোট ভাই গ্রাম পুলিশ শাহ আলম চৌকিদার অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়ে পিতার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া কাঞ্চনপুর মৌজায় সাবেক ১৬৮নং খতিয়ানে ১৪২১, ১৪১২, ১৪২৭, ১৪২৬ দাগের অন্দরে সাড়ে নয় শতাংশ জমির মালিক হন। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তিগুলো আলম পরিবারের বাইরের লোকদের কাছে বিক্রি করার চেষ্টা করলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ সম্পতিগুলো বড় ভাইয়ের কাছে বিক্রির অনুরোধ করলে বড় ভাই মোস্তফা উপযুক্ত মুল্য পরিশোধ করে সাফ কবলা মুলে জমিগুলো ক্রয় করে রাখেন। ছোট ভাই শাহআলম জমি বিক্রি করে টাকা পয়সা নষ্ট করে এলাকার বিভিন্ন মানুয়ের বাড়িতে আশ্রিত জীবনযাপন শুরু করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বড়ভাইকে অনুরোধ করে তার ঘরের পাশে একটি পরিত্যক্ত্য ঘরে থাকতে দেয়। এক পর্যায়ে আলম চৌকিদার তার বিক্রিত জমি সাড়ে নয় শতাংশ পুনরায় দখল করে একটি পাকা দালান নির্মান করেন। এতে বড় ভাই মোস্তফা এঘটনাটি স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গেলে ৫-৬ টি বেঠকে মোস্তফাকে জমি ছেড়ে দিয়ে চৌকিদার শাহ আলমকে অনত্র সড়ে যেতে বলেন। এতে বড় ভাইয়ের পরিবারের উপর চৌকিদার শাহ আলমের অত্যাচার নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। কখনো তার স্ত্রীকে বাদি করে কখনো সে নিজে বাদি হয়ে ৫-৭ টি মিথ্যা মামলা দিয়ে বড় ভাইয়ের পুরো পরিবারকে সে বাড়ি ছাড়া করে দেয়। এরই ফাঁকে পাকা দালানের নির্মাণ কাজ শেষ করে পুরো জমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিতে থাকলে কয়েটি মামলায় মোস্তফা তার চেলেরাসহ কয়েকবার জেল খাটলে পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে। এলাকার লোকজন ক্ষুব্দ হয়ে কয়েকবার তাকে ঘেরাও করলে মামলা প্রত্যাহারে করে নেন শাহ আলম। প্রতিটি মিথ্যা মামলার রায়েই মোস্তফা আদালত থেকে খালাস পান। গত ৭ মে লক্ষ্মীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রট আদালতে চেকিদার শাহ আলমের স্ত্রী আরজিনা বেগম বাদি হয়ে মোস্তফা ও তার পুত্রসহ ৪জনকে আসামী করে একটি চাঁদাবাজি ও ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। আদালত রায়পুর থানাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহন করার নির্দেশ প্রদান করেন। মূলত যাদের এ মামলায় সাক্ষী হিসেবে দেয়া হয়েছে তার মধ্যে ৩ ও ৪নং সাক্ষি এধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানেন না। তারা এ মামলার সাক্ষী এ বিষয়টিও তারা অজ্ঞাত। এলাকাবাসী জানান, চৌকিদার শাহ আলম খুবই খারাপ প্রকিতির লোক। সে চৌকিদারের এ প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে মোস্তফার পরিবারকে দা-ছেনি নিয়ে মারতে আসে। এলাকায় সে দু’টি চুরির ঘটনায় হাতে নাতে ধরা পড়লে এলাকাবাসী তাকে গণধোলাইও দেয়। বাংলা বাজারে পানের বরজের পিছনে নিয়মিত জুয়ার আড্ডা বসিয়ে সে রাতারাতি টাকাপয়সার মালিক বনে যান। এলাকায় নানা চুরি ডাকাতিসহ নানা অপকর্মের মূলে তার হাত রয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ছোট ভাই শাহ আলম চৌকিদার ও তার স্ত্রী আরজিনা বেগম বলেন, মোস্তফার ছেলেরা ঘরের কাজ করতে গেলে আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে। জমিটি আমরা বিক্রি করলেও আবার ক্রয় করে নিয়েছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার-৩ বলেন, মামলার বাদি বিবাদিদের পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এমআরএস/এএস/মে ৩০, ২০১৪)