বিছে,কেঁচো ও কেউটে প্রসঙ্গে

সূর্য না উঠলে মনে হয় অন্ধকারে বাংলাদেশ
খুঁড়িয়ে হাঁটছে আর
ভূমি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে অসংখ্য
বিছা,কেঁচো,কেউটে-----

তাই দেখে দেখে তীর্থকেন্দ্রের দিকে
ছুটে যাচ্ছে যে যুবতীরা তাদের চোখ থেকে
লাফিয়ে পড়ে কয়েকটি
প্রজাপতি আমাকে ধিক্কার দিয়ে উড়ে যাচ্ছে
ফলে,একদল নিশাচর মৃত্যুর ফাঁদ পেতে নিগূঢ়ে
পাশা খেলছে
এবং শেয়ালের সুর প্রবাহ আরো দূর কোন
শেয়ালদের ডেকে আনছে
আর কোলবালিশে
নিদ্রাদের জয়বাংলা ধ্বনি শুনে
শোকের দিকে ছুটে যাচ্ছে শুভসকাল
সে আমায় দেখেই লালচুম্বন উড়িয়ে দিল
আমি চুম্বনের অবষাদ নিয়ে এখন তার নৈকট্যে আছি।


শূন্যের দিকে যাচ্ছি

সূর্য থেকে চুরি গেছে জাফরানি রঙ
সূর্য ঘুমিয়ে আছে
আর কর্পূরের মত উবে গেছে উত্তাপ
ফলে,রক্তনাশ হচ্ছে রক্তচন্দন গাছের,
মৃতঘণ্টা বেজে উঠছে।
যে বালকেরা ফোকলা দাঁতে হাসতো
তারা এখন শোকবৃষ্টিতে ভিজে একাকার
অতএব,রক্ত শব্দটি আমাদের কণ্ঠস্থ হয়ে
গেছে এই দীর্ঘ শীতরাতে----

আমরা শূন্যের দিকে যাচ্ছি হুহু পথ ধরে
মাথায় তুষার পড়তে পড়তে চুলগুলো কেমন সাদা
হয়ে গেছে তবু ভোরের টানে উঠে আসছে
না ডিসেম্বরের রোদ।

সুতরাং যখন তোমার গাত্রোত্থান হবে
এক কচি কণ্ঠের জয়বাংলা ধ্বনির সঙ্গে শীতরাত দুভাগ---
একভাগ তার সুটকেসে তালা দিয়ে রাখবো
রৌদ্র এলে ভাঁজ খুলে দেখাবো।


অন্ধ হও অথবা গর্জন কর

বরং চোখ বাঁধো কালো রুমালে,অন্ধ হও।

গণতন্ত্র তো রয়েছেই:এটাই সময়ের প্রশ্ন

এইসব বীভৎস দৃশ্য যাতে দেখতে না হয়
যা তোমার শরীরে কম্পন সৃষ্টি করছে,
মূক হয়ে আসছে ভাষা,তুমি মাটিতে পড়ে যাচ্ছো

চোখ বাঁধো কালো রুমালে,তোমাকে অন্ধ
হতেই হবে।

কিসে অন্ধ হবে,ধর্ম,বিশ্বাস,আবেগ অথবা
সমার্থক
যেটা সুবিধাজনক,অন্ধ হও--
তোমার তো জানা আছে ব্লাকহোল ট্রেজেডি

তারপর যদি কোন সুড়ঙ্গে,কোন ডাস্টবিন,খানাখন্দ
অথবা বনের মধ্যে ঢুকে যাও
বুকের ভেতর ধুকপুক করে,তোমার সাহসের কোন সমাচার নেই,বিমূঢ়

কেশর ফোলানো সিংগিকে,শৃগাল,আরোও যত মাংসাশী জন্তু আছে তাদের জিজ্ঞাস কর
এখন কি করা উচিৎ ?
তারা উত্তর দেবে,

এখন শব্দ করার সময়
বরং ধ্বনি তুলো,উদাত্ত,অনুদাত্ত,স্মরিত
যা তোমার পছন্দ,ধ্বনি তুলো---

একটা সময় তোমাকে অবশ্যই গর্জন করতে হবে।
নিপীড়িত ক্রিতদাস হয়ে বল কতদিন থাকা যায়?

অথবা বোধের প্রকোষ্ঠে প্রশ্ন ঝুলিয়ে
অন্ধ হও
ধর্ম,বিশ্বাস,আবেগ,অথবা সমার্থক
যা তোমার সুবিধাজনক।


সময়ের সার্কাস

প্রজাতন্ত্রের রাষ্টভাষা বাংলা,এই শুনে অদ্ভূত উড়াল
দিল একটি দোয়েল
এখন রাত্রির কব্জি ধরে সকলেই দাঁড়িয়ে থাকে।

রাতমূর্তি-এ এমন শিয়ালনৃত্য আর হুক্কাহুয়া গানে
তুমি কি ঘুরে দাঁড়াবে না বাংলাদেশ?

এদিকে বিব্রতকাল কথা ও কটাক্ষের নদীতে
আমার অনর্গল ডুবসাঁতার;
কতদিন উঠতে চেয়েছি উঁচু সম্পন্ন স্থিতে
আমার হাত হাতুড়ে ফিরে সার্থকনামা

জিজ্ঞাসার ভোরে বুকের ভিতরে জমে ওঠে না
প্রশ্ন-উত্তর পর্ব

কিভাবে ভেল্কি এসে আচ্ছন্ন করে সার্কাস সময়
আমাদের তীব্রভাষা;এইভাবে হাঁ-মুখ

ঘুরেফিরে আসে দাঁড়টানা দিন;দুর্ভেদ্য প্রহেলিকায়
চিনি না শুভাশুভ শুধু দেখি,দিন কে দিন সমুদ্রের
স্বাস্থ্যহানী!


আরেকটি সকাল

শিশিরের ওপাশে আমার চোখ হিম হয়ে যায়

দীর্ঘহাঁফ দিয়ে ঠেলে দেই প্রাত্যহিক
রোজনামচা

সমাজ সংসারের চেয়ে প্রিয় হয়ে ওঠে
সন্ন্যাসপথিকতা,শিবনাচ,চড়কগাছ---

ঘূর্ণনে

ঘূর্ণনে আমার নিরীহ বোবাবমি;ধ্বনিবিপর্যয়,

বটতলায় সন্ধ্যা নামে

ক্ষুধার ভেতর দিয়ে
হেঁটে আসে অন্তহীন উৎপাত তাই আজ
অন্তঃপুরেই তৃষ্ণার কাহিনী শুনছি----

যেখানে দাঁড়িয়ে আছি,সেখানে প্রাচীরের
বাইরেই আকাশ
চোখ ফূটলেই নক্ষত্রের বিকিরণ------


হঠাৎ করে

হঠাৎ করে হলুদ রোদ শিশিরকে চুম্বন করবে
তুমি ডেকে ডেকে বলবে বাইরে এসো, সকাল
হয়েছে-----

দরজা খোলার শব্দে ঘুম ভাঙবে
আমি আড়মোড়া ভেঙে রৌদ্রের অনলে
বিশুদ্ধ হবো
আর ষণ্ডামির শ্বাসবৃত্তে ছুঁড়ে দেব
সদগুণগুলো

এরপর বেড়িয়ে পড়বো হারানো বৈঠার
খোঁজে
জলের লিরিক শুনে উড়াবো পাল
আর মাথা উঁচু করে পেরিয়ে যাবো নদীর প্রতিটি
বাঁক

ভালবাসা আমার,তোমায় দেব মস্তকের সব
উর্বরতা,ফসলের সংকেতময় মাঠ।


রক্তে ঝাঁকি দিচ্ছে বকধার্মিক

সাদা পাঞ্জাবীতে ফোটে উঠা তিলগুলো দেখতে দেখতে স্ত্রী ভাবলো
ব্লিচিং পাউডার আবিষ্কার হওয়ার পূর্বে
পৃথিবীতে যেসব তিল উজ্জল হয়ে দেখা দিয়েছিল
তারা ব্লিচিংয়ের কেরামতি দেখে নাই।
তার ভাবনার উপর দিয়ে কতগুলো বাদুড়ের বাচ্চা দিগন্তের দিকে উড়ে গেল
আর আমাদের বাগানে বাগানে ডালাপালা মেলে ধরলো
দারুণ সব শবগাছ............।
তুমি ঐ বাগানসীমায় গাছে পীঠ ঠেকিয়ে মুক্তমনে কি ভাবছো ব্রজের কানাই?
রক্তে ঝাকি দিয়ে নিচ্ছে বকধার্মিক
কোত্থেকে এক ক্ষেপা দৌড়ে এসে বলছে; ওরে আয় আয়,হাওয়া হয়ে যাবি,হাওয়া হয়ে যাবি।


(ওএস/এস/জানুয়ারি১১,২০১৬)