প্রবীর সিকদার


বুধবার বিকেলে আমি এবং আমার ছেলে সুপ্রিয় গিয়েছিলাম গুলশানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আক্কু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর অফিসে। তাঁর অফিস চত্বরে পা রাখতেই হাসিমুখে এক তরুণ এগিয়ে এসে আমাদের নিয়ে গেলেন অফিস রুমে।

অফিস তো নয়, যেন মিনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ! বঙ্গবন্ধুর বাঁশের লাঠি দিয়েই তৈরি অফিস রুমের ওয়াল। বসতে না বসতেই ছুটে এলেন আক্কু চৌধুরী। নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা সম্বোধন করেই জড়িয়ে ধরলেন আমাকে। আমিও পা ছুঁয়ে প্রণাম করলাম। বসলাম। এলো কফি। তারপর জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু জয় শেখ হাসিনা শব্দধনি উচ্চারণ করেই শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আড্ডা।

দীর্ঘ আড্ডায় আমি বিস্ময়ের সাথে অনুভব করলাম একাত্তরের একজন তরতাজা তরুণকে ; এখনো তাঁর একাত্তরের অবিকৃত আবেগ ! এক পর্যায়ে বিদায়ের পালা। আমাকে আর আমার ছেলেকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুটি প্রকাশনা উপহার দিলেন। সাথে দিলেন মানচিত্র খচিত মুক্তিযুদ্ধের পতাকা ও জাতীয় পতাকার ব্যাজ। আমাকে আবার সস্নেহে জড়িয়ে ধরে আমার শার্টের কলারে পরিয়ে দিলেন একটি ব্যাজ; সঙ্গে নির্দেশ দিলেন, আমি যেন এই ব্যাজটি সব সময় ব্যবহার করি। আমি সম্মত হওয়ায় তিনি আবার জড়িরে ধরে আমাদের নিয়ে নিচে নেমে এলেন; এলেন সোজা গেট পর্যন্ত বিদায় জানাতে।

বিদায় পর্বে আমরা একে অপরকে বেশ কয়েকবার স্যালুট জানালাম। আমরা বিদায় নিয়ে যখন সড়কের যানবাহনের ভিড়ে হারিয়ে গেলাম তখন আমি একাত্তরের অবিকৃত আবেগ নিয়েই মন প্রাণ উজাড় করে আবারও স্যালুট জানালাম নিরন্তর মুক্তিযোদ্ধা একজন আক্কু চৌধুরীকে।

(অ/জানুয়ারি ১৪, ২০১৬)