একটি সেতুর জন্মকাহিনি

একটি সেতু কত বরফের অশ্রু আর হাড়ের আগুনে রচিত হয়? সারাজীবন একটি সেতুই মানুষ রচনা করে যায়...মানুষের কাছে যাওয়ার! শরীরের অজস্র সংযোগস্থলের মতো এই সেতু, হৃদয়ের গুঞ্জরণ ছড়িয়ে পড়ে ক্রমশ সেতুর প্রস্থে... আর সাপের বিষের চেয়েও তীব্র রক্ত সেতুর দৈর্ঘ্যে মিশে যায়...

মরণোত্তর পায়ে হেঁটে যাওয়ার পরম্পরাই একদিন সেতু হয়ে উঠে!


পরিবর্তন-কাউন্টার

কোনো শীত এক্সচেঞ্জ করে আমি রেলগাড়ির আদর নেবো...কোনো দুপুর এক্সচেঞ্জ করে নেবো হীরামনের ডিম...

বালিশ চেঞ্জ করে সমুদ্র আর সম্বোধনের বদলে অসংখ্য ডট! ডটগুলো এক একটি জীবনের মিছিল হয়ে থেকে যাবে...

শ্রেষ্ঠ কবিতা

আমরা যে রিকশাতেই চড়ি না কেন আমাদের রিকশা কী কারণে জানি না, প্রমোদ-পাখিদের আনন্দ ভৈরবী হয়ে যায়!

গভীর জনারণ্যের ভেতর রিকশা ছুটতে থাকে যখন রবীন্দ্রসংগীতের সম্মোহনী বেল বাজিয়ে, তখন আশ্চর্য নীল আর সাদা রঙের মেঘে আকাশ ভরে যায় কেবল, রিকশাঅলা হয়ে উঠে কোনো দেবদূত, ঠোঁটে তার বিদ্যুৎ হাসি
ঢাকার দু'ধারের সারি সারি বিল্ডিংগুলি হয়ে উঠে সবুজ পাহাড়
ট্রাফিকের বাঁশি সমুদ্রের গর্জন আর
আমার হাতে তোমার হাত তখন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা!


মা

মানুষ মাপার ফিতাটা মার কাছে রেখে এসেছি...তাই পোশাকের মাপ বারবার ছোট হয়ে যায়!

শহরে থাকার যোগ্যতা

রেলগাড়ি চড়ে আমি এই শহরে একবার ইন্টারভিউ দিতে এসেছিলাম। শহর গম্ভীর স্বরে আমার ইন্টারভিউ নিয়েছে। বলেছে, যখন তখন মা'র কথা মনে করা যাবে না।দূরত্ব হলো আশ্চর্য শিল্প...নৈকট্যে গেলেই তার মৃত্যু হয়।গরুর চামড়ার জ্যাকেট গায়ে দিয়ে আমি তারপরের বছর শহরের শীতোৎসবে মিশে গেলাম। মা ফোনে বলল, আজ পৌষ-সংক্রান্তি...আমি বললাম- মা আমি এই শহরে থাকার যোগ্যতা অর্জন করেছি...
একবেলা ভাতের বদলে পিঠা খেয়ে কী হবে?

খড়ের আগুনের পাশে তবু দাঁড়িয়ে থাকে মা।যার গ্রাম্যতা মুছে যায়নি। সন্ধ্যায় সন্তানের মঙ্গল কামনায় যে আজও প্রদীপ জ্বেলে যায়!

আর সে প্রদীপকে বিদ্রুপ করে জ্বলে উঠে শহরের অসংখ্য নিয়ন আলো...