তোফায়েল তফাজ্জল এর একগুচ্ছ কবিতা
পাথরের নিষ্ঠুরতা কতো প্রকার ও কি কি
মানুষের রক্ত ময়লা পানির চেয়েও দামে কম,
উহ শব্দে আর তেমন কাটে না দাগ!
এ কোন যুগের নখে আমরা ? কারা করলো এর আমদানি এখানে ?
বুনো মাংশাসীরা আচরণ কি করেছে বিনিয়োগ জনপদে ?
শকুন তো মৃতের অপেক্ষা করে, ছিঁড়ে খায়,
এরা জীবিতের চাপড়া খুলে
লবণ লাগিয়ে উদ্দাম উল্লাসে মাতে।
পাথরের নিষ্ঠুরতা কতো প্রকার ও কি কি – সবই বর্তমানে।
সেই সব অন্ধকার দিক
সরল রেখায় পা না ফেলে নিজেকে অ্যাঙ্গেলে রেখে
যদি নাড়তে খায়েস কলকাঠি,
খুঁচিয়ে অন্যের নোংরা দিন থাকতে চাও অ-ধরায়,
পারবে। শত্রুর মুখেও পড়বে
বাতাসে ছড়িয়ে পড়া ছাইয়ের উড়ন্ত আক্রমণ,
ভাড়া করা, ভয়ে তাড়া করা শৃগাল, শকুন।
নুনে, ঘামে লব্ধ অর্জনের হীরা জলে ছুঁড়ে ফেলে
পথে বসাতেও পোড়াতে হবে না তেমন কাঠখড়।
এসব কৃত্তিম জলরাশি খালে থাকবে কতোদিন?
এ খাল শুকিয়ে হবে রোদে পড়ে থাকা মরা সাপ,
অদূরে দাড়িঁয়ে থাকা ফলের উদ্যান সাক্ষ্য দেবে –
কিভাবে, কখন অংকুরিত হয়েছিলো বিষবৃক্ষ,
ভিডিও আকারে হাতেনাতে ধরা খাবে সেই সব অন্ধকার দিক।
শুধু মাথাটুকু গর্তে গুঁজে কাক দেহটাকে মনে করে সম্পূর্ণ অ-ছোঁয়া,
তোমার বুদ্ধিও সে পদাঙ্কে – বলতে থাকবে অনেকেই।
তটস্থরা কেউ কেউ জানতে চাবে, কি উপায় গোলাম হোসেন?
বিপদের জল তখন চূলায়, বসে চুষবে কি আঙুল?
নাকি কিস্তি টান দিবে জুদী পাহাড়ের দিকে দিয়ে ভুলের মাশুল?
রাজার সে সুখ বোল
গল্প মজিয়ে নৌকায় কাল ক্ষেপণের দুষ্ট ইচ্ছে
কিংবা অন্যরূপ এক শিক্ষা দিতে প্রাকৃতিক চাপ বিয়োগের
এক, দু'নম্বর নিঃসরণ হেনস্তায়,
রাজা মহাশয় ভারী চাপে –
দশের, দেশের চলমান রীতিনীতি, পরিস্থিতি
একেও কি হার মানা নয়?
অন্ত্রনালী ছিঁড়ে ছিঁড়ে, বায়ুও কোঁকিয়ে –
প্রজা-সাধারণ সবাই এখন বস্ত্র্দি নষ্টের শেষ ধাপে।
তাই, মোড় নেয়া চাই এক দিকে, সুষ্ঠু সমাধানে,
জনতার মুখে মুখে যাতে রাজার সে সুখ বোল।
নিশ্ছিদ্র নিষিদ্ধ
ওই ফলটা খাওয়া নিশ্ছিদ্র নিষিদ্ধ – এমন নির্দেশে
দু'মনেই বেঁধে উঠলো রহস্যের বেদানার দানা,
এর মাঝে জানি, কতো কী গড়িয়ে বা লুকিয়ে –!
বস্তু বা যে কোনো কাজ যদি আটকে দেয়
সাংকেতিক পিনে, আলতারাপে,
চোখে টান পড়া মোড়কের অভ্যন্তরে,
তা খোলার, দেখার বা আস্বাদনে বিপদ সীমার ছ'কাঠি ওপর দিয়ে
বয়ে যায় জিভে জল।
আদম ও ইভের প্রবৃত্তির কাছে হলো পরাজিত,
শ্রেষ্ঠ হলেও তো
তারাও মানুষ। এ ছাড়া, ফলটা ছিলো
প্রকৃতির লীলা রঙ্গে চুম্বক প্রেরণে
ঝুলন্ত সিঁড়ির অভিনয়ে কিংবা প্যরাশুটে ফাঁকা পথ পাড়ি।
শাস্ত্রীয় তেল
এ তরল পদার্থের বেড়েছে কদর, বেশ। দামেও ঘোড়াটি
হয়ে জোড় পায়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গন্ডির অধিক
অবন্ধুর, বন্ধুর এলাকা।
নামের শুরুতে শাখা-প্রাশাখা বাড়িয়ে একে লিপ্ত হতে দেখি
নানা কাজে, জায়গা-বেজায়গায় –
ঢাকঢোল পিটিয়ে আছে রান্নাঘরে রসনা তদবিরে,
দৈহিক প্রফুল্ল ধরে রাখতে পাবে উদ্যোগী হিসেবে, ব্যথা বিনাশেও
শরীরের আনাচে-কানাচে।
গাড়ি বা হাওয়াই যান এর তৎপরতা ছাড়া ঘটে অঙ্গহানি,
গতিশীল কর্ম ঢুকে পড়ে প্রশ্নবোধকের লালে,
দাহ্য উস্কানিতে ভস্মরূপে ভ্রমণের বাকি পথ।
সফল, সরব কর্মক্ষেত্রে নেমে আসে ভুতুড়ে নৈঃশব্দ।
ধুলিবালি জমে ঢাকা পড়ে থাকা ফাইল বা কাজ দেখতে আলো-মুখ
বাঁ-হাতের নিশপিশের সাথে এ-ও যে রসিক ভূমিকায় !
স্ট্যাটাসে লাইক বা মন্তব্যে পিঁপড়া সারি – এতো লন্বা,
এখানেও খুঁজলে পাবে দুধ-কলা, তেলের বাড়াবাড়ি।
(ওএস/এস/জানুয়ারি১৬,২০১৬)