জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতাল প্রভাবশালী ডাক্তার খালেদের দাপটে আতংকে রূপ ধারণ করেছে। এ এলাকায় তার বাড়ি হওয়ায় নিজস্ব সাঙ্গপাঙ্গদের প্রভাবে খালেদ বেপরোয়া। হাসপাতালে দায়িত্ব পালন না করে নিয়মিত চেম্বারে বসে মোটা অংকের ভিজিট আদায় করে রোগী নিয়ে ব্যবসায় লিপ্ত তিনি।

সরকারের কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে নিয়মিত ফাঁকি দিচ্ছেন কর্মস্থল। রাতের বেলায় জরুরী বিভাগের দায়িত্ব পালন না করে সরকারি মোবাইল নাম্বার নিয়ে বাসায় ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জরুরী বিভাগে রোগীরা এসে বিপাকে পড়েন। সরকারী মোবাইল নাম্বারে কল দিলে শুনতে হয় কটু কথা। তার অসদ আচরণ থেকে রক্ষা পাননি কেউ। রাতে জকিগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে এসে বিপদকালীন সময়ে অনেক রোগী ডাক্তার না পেয়ে ৯০ কিলোমিটার দূরের জেলা শহর সিলেটের বেসরকারী হাসপাতালে আশ্রয় নিতে হয়। এলাকার দাপটে রোগীরা ডাক্তার খালেদের কাছে অসহায়। অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ভূয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট বাণিজ্যের।

জানাগেছে, প্রায় তিন বছর আগে ডাক্তার খালেদ জকিগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে যোগদান করেন। তাঁর বাড়ী হাসপাতাল থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরের শস্যকুড়িতে হওয়ায় সকলের কাছে তিনি প্রভাবশালী ডাক্তার হিসেবে পরিচিত। যে কেউ তার দায়িত্ব অবহেলার বিরুদ্ধে কথা বললে লেলিয়ে দেন নিজস্ব পেটুয়া বাহিনী। হেনাস্থার শিকার হন সেবাভোগী রোগীরা।

হাসপাতালের সকল অনিয়মের পিছনেই রয়েছে তাঁর কালো থাবা। কর্মরত সাংবাদকর্মী হাসপাতালের সরকারী নাম্বারে কল দিয়ে সংবাদ সংগ্রহের চেষ্ঠা করলেও তিনি র্দুব্যবহার করেন। ফিলিম স্টাইলে সাংবাদিককে তাড়িয়ে দেন। রবিবার রাতে ভরণ এলাকায় মারামারিতে আহত রোগীদের অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক আল হাছিব তাপাদার হাসপাতালের জরুরী বিভাগের নাম্বারে কল দিলে ডাক্তার খালেদ তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন সরকার তাকে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়নি। পরে খবর নিয়ে জানা যায় তিনি রাতে দায়িত্ব পালন না করে বাসায় চলে যান। পরদিন সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে ফিলিম স্টাইলে র্দূব্যবহার করেন। পরে আবার প্রভাবশালীদের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন।

সুলতানপুর ইউপি সভাপতি আব্দুস সাত্তার জানান, কিছুদিন পূর্বে তিরাশী গ্রামের তেরা মিয়াকে ডাক্তার খালেদ বড় অংকের উৎকোচের বিনিময়ে একটি ভূয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট দেন। তেরা মিয়া ভূয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট নিয়ে জকিগঞ্জ কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তিরাশী গ্রামের আব্দুল জলিল, জাকির হোসেন, কামরুল ইসলাম ও প্রবাসী জামরুল ইসলাম হয়রাণীর কবলে পড়ে এখনো তারা হেনাস্থার শিকার হচ্ছে। ডাক্তার খালেদের সার্টিফিকেট বাণিজ্যের একাধিক অভিযোগ রয়েছে উপজেলা জুড়ে।

এ ব্যাপারে ডাক্তার খালেদ বলেন, তিনি এ এলাকার সন্তান হিসেবে দাবী করে মানুষের সাথে কড়াকড়ি করেন। এটা র্দূব্যবহার নয়। ভূয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট বিষয়ে জানতে চাইলে জানান, তিনি এরকম কোন সার্টিফিকেট দেননি।

(জেআরটি/এস/জানুয়ারি ১৮,২০১৬)