নিউজ ডেস্ক : চিকিৎসকগণ আমাদের প্রতিদিন ন্যূনতম আট গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন— এই কথা আমাদের অজানা নয়। কিন্তু আমাদের অনেকেই হয়তো জানি না ঠাণ্ডা পানি পান করার চাইতে উষ্ণপানি পান করে কিছু অসাধারণ উপকার পেতে পারি। তাই জেনে নিন উষ্ণপানি পানের কয়েকটি বিস্ময়কর উপকারিতা।

ওজন কমায়:
যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন, ঝেড়ে ফেলতে চাচ্ছেন কয়েক কেজি অতিরিক্ত ওজন— তাদের অবশ্যই প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস উষ্ণপানিতে এক চিলতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করা উচিত। কারণ, উষ্ণপানি আপনার শরীরের মেদ কলায় আঘাত হেনে তার ক্ষয় নিশ্চিত করে।
শ্বাসযন্ত্র পরিষ্কার রাখে:
উষ্ণপানি সর্দি, কাশি ও গলদাহের জন্য চমৎকার একটি প্রাকৃতিক উপাদান। উষ্ণপানি পানে শ্বাসযন্ত্রের নালীতে জমে থাকা কঠিন কফও পরিষ্কার হয়ে যায়। যা আপনাকে কফ জনিত অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিবে।
অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করে:
অকালে বুড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ী এমন কিছু দূষিত পদার্থ উষ্ণপানি আপনার শরীর থেকে দূর করতে সহায়তা করে। যা আপনার শরীরের তারুণ্যকে ধরে রাখার জন্য আবশ্যক। আর ত্বকের কোষ পরিষ্কার ও এর নমনীয়তা বৃদ্ধির মাধ্যমে চামড়ার ক্ষয় রোধ করে উষ্ণপানি।
ব্রণ ও ত্বকের ফুসকুড়ি প্রতিরোধে:
উষ্ণপানি ত্বকের গভীর থেকে পরিষ্কার করে দেয় দূষিত পদার্থগুলোকে, ফলে ব্রণ ও ত্বকের ফুসকুড়ি জাতীয় নানা সংক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
স্বাস্থ্যকর চুলের জীবনীশক্তি:
উষ্ণপানি পান নরম চকচকে স্বাস্থ্যকর চুল পেতে অসামান্য উপকারি। এটি চুলের গোড়ায় স্নায়ুর শক্তি ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। যার কারণে উষ্ণপানি পানকে বলা যায় আপনার স্বাস্থ্যকর চুলের প্রাকৃতিক জীবনীশক্তি। এটি চুল পড়া কমিয়ে দেয় ও নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
খুশকি প্রতিরোধ করে:
উষ্ণপানি মাথার ত্বককে রুক্ষ হতে দেয় না এবং এটি শুষ্ক মাথার ত্বক ও খুশকির বিরুদ্ধে কাজ করতে সাহায্য করে।
রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখে:
পেশির সঞ্চালন ও স্নায়ুর সঠিক কর্মকাণ্ডের জন্য উষ্ণপানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দিয়ে নালিতে জমে থাকা চর্বি ভেঙ্গে দেয় যা স্নায়ুতন্ত্রকে সুস্থ রাখে।
খাদ্য হজমে সহায়তা করে:
খাদ্য হজমে উষ্ণপানি খুবই উপকারি। সমীক্ষায় দেখা গেছে— তেল সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার আগে বা পরে ঠাণ্ডা পানি পান করলে তা তেলকে শক্ত করে অন্ত্রের গায়ে জমিয়ে রাখে। যা থেকে পরবর্তীতে অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই ঠাণ্ডাপানির সাথে কিছুটা গরম পানি মিশিয়ে পান করে এ সমস্যার হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে অন্ত্রের সুরক্ষায় উষ্ণপানি অনেক কার্যকর ভূমিকা রাখে। আর হ্যাঁ, এটা অবশ্যই মনে রাখবেন— উষ্ণপানি খাবারকে সহজে হজম করতে সহায়তা করে।
শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানসমূহ অপসারণ করে:
বিপাক বা অন্য কোন উপায়ে তৈরি বিষাক্ত উপাদানগুলো অপসারণে উষ্ণপানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উষ্ণপানি পান করলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে ফলে ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানগুলো অপসারণ করে সুস্থ থাকতে আমাদের সহায়তা করে।
পিরিয়ড নিয়মিত করণে:
উষ্ণপানি মেয়েদেরপিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে উপকারি। পানির উষ্ণতা পেটের পেশির উপর প্রভাব ফেলে যাপিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
সুস্বাস্থ্যের খাতিরে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস উষ্ণপানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করার অভ্যাস গড়ে তোলাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এতে আপনার দেহঘড়িটি থাকবে সুরক্ষিত অনেকগুলো ক্ষয়ের হাত থেকে।
(ওএস/এএস/মে ৩১, ২০১৪)