: খাইরুল হাসান জুয়েল :


আপনার বিশ্বাসের মানুষগুলো এক এক করে চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। ১/১১ এর সেই দুঃসহ দিনগুলোতে যে মানুষটি আপনার মুক্তির দিনগুনে এক মুহূর্তের জন্যও রাজপথ ছাড়েনি, আপোষ করেনি কোন ষড়যন্ত্রেরর সাথে, ভয় করেনি কোন রক্তচক্ষুর চোখ রাঙানিকে, বিক্রি হয়ে দল ছেড়ে যাননি কোন লোভনীয় অফারে। এই সৎ, নিষ্ঠাবান, নির্লোভ, নিরহংকার পরোপকারী, সদালাপী আজিজ ভাইও আজ এক বুক অভিমান আর আপনার প্রতি অগাধ আস্থা আর বিশ্বাস নিয়ে চিরতরে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। যাবার পূর্বে সহযোদ্ধাদের অসহযোগিতায় আপনার প্রতি অগাধ আস্থা আর বিশ্বাসই ছিল তার একমাত্র ভরসা।

মাননীয় নেত্রী, এখন কার উপর নির্ভর করে বলবেন? যেমন বলেছেন এম এ আজিজ ভাইয়ের বেলায়... ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির ক্ষেত্রে যখনি একটি মহল আজিজ ভাইয়ের বার্ধক্য এবং অসুস্থতায় তার অক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন এনেছে তখনি আপনি আস্থা, বিশ্বাস এবং নির্ভরতার জায়গা থেকে জবাব দিয়ে দিয়েছেন...‘অসুস্থতার কারণে আজিজ ভাই কাজ না করতে পারলেও অন্তত বেঈমানীতো করবেন না।’ এটা যে কত বড় বিশ্বাস, কত বড় নির্ভরতার বহিঃপ্রকাশ তা আর আজকের প্রজন্মের কাউকে বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন হবে না।

এখন তো যে লংকায় যাচ্ছে সে-ই রাবণ হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ আপনি যাকে যেখানে বিশ্বাস করে বসিয়েছেন তিনিই মনে করছে ওটা তার উত্তরাধিকার সূত্রে নূন্যতম পাওয়া এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সেটা তার দখলেই থাকবে। মনে হয় যেন তারা নিজের আলোয় আলোকিত প্রদীপ- যা শিখা চিরন্তণ হয়ে জ্বলবে সারানিশি। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা, দলের প্রতি নিষ্ঠা, মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট সব ভুলে তারা এখন নিজের আখের গোছাতেই বেশি ব্যস্ত।

আজিজ ভাইয়ের মত যে মানুষগুলো সারাজীবন আপনাকে ঘিরেই স্বপ্ন বুনেছে, আপনি যাদের মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন এমন সৎ, নিষ্ঠাবান, নির্লোভ, নিরহংকার, পরোপকারী, সদালাপী এবং ভালো মানুষের উদাহরণ টানলে যে মানুষগুলোর নাম মানুষের মুখে মুখে চলে আসে, সেই মানুষগুলো একে একে চিরবিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছেন না ফেরার দেশে। দিনে দিনে নতুন প্রজন্মের কাছে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের তালিকা আজ প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে।

লেখক: সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।