স্টাফ রিপোর্টার :আজ বাংলা সাহিত্যের ভগীরথ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯২তম জন্মজয়ন্তী  । ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি মধুসূদন যশোরের সাগরদাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রাজনারায়ণ দত্ত, মা জাহ্নবী দেবী। জন্মদিনে কবিকে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি!

অসামান্য মেধার অধিকারী আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম অগ্রপুরুষ মধুসূদন দত্ত ব্যক্তিজীবনে ছিলেন খেয়ালি আর বিলাসপ্রিয়। যশ-খ্যাতির মোহ-আচ্ছন্ন মধুসূদন দত্ত হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে ১৮৪৩ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি খৃস্টধর্ম গ্রহণ করে নামের আদ্যে যুক্ত করেন ‘মাইকেল’। তত্কালীন হিন্দু সমাজের ভিতর তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে তিনি হিন্দু কলেজ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। মাদ্রাজে থাকাকালে নীলকর ডুগাল্ট ম্যাকটাভিসের আশ্রিত কন্যা রেবেকা ম্যাকটাভিসকে বিয়ে করেন। মধুসূদন গ্রিক, ফরাসি, জার্মান, ল্যাটিন, সংস্কৃত ভাষাসহ বহুভাষা রপ্ত করেন। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যের এ অমূল্য সম্পদ মহাকাব্য ‘মেঘনাদবধ’ ছাড়াও রচনা করেন কাব্য ‘তিলোত্তমা সম্ভব’, ‘ব্রজাঙ্গনা’ ‘বীরঙ্গনা’ চতুর্দশপদী কবিতাবলী, নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’ ‘পদ্মাবর্তী’ ‘কৃষ্ণকুমারী’ ‘মায়াকানন’, প্রহসন ‘বুড়োশালিকের ঘাড়ে রোঁ’, ‘একেই কি বলে সভ্যতা’, ইংরেজি কাব্য ‘দ্য ক্যাপটিভ লেডি’। মধুসূদন দত্ত ১৮৭৩ সালে ২৯ জুন কলকাতায় আলীপুর জেনারেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সেন্ট জেমস চার্চ এবং ধর্মযাজকের উদ্যোগে খৃস্ট্রীয় রীতি অনুযায়ী কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোডের সমাধিস্থলে কবির মরদেহ সমাধিস্থ করা হয়।

মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে বসছে মধুমেলা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় কবির জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা হচ্ছে।

রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে।
সাধিতে মনের সাধ, ঘটে যদি পরমাদ,
মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে।
প্রবাসে, দৈবের বশে, জীব-তারা যদি খসে
এ দেহ-আকাশ হতে, নাহি খেদ তাহে।
জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে,
চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে?
কিন্তু যদি রাখ মনে, নাহি, মা, ডরি শমনে;
মক্ষিকাও গলে না গো পড়িলে অমৃত-হ্রদে।



(ওএস/এস/জানুয়ারি২৫,২০১৬)