মাগুরা প্রতিনিধি : স্বল্পমূল্যে ইট দেবার কথা বলে মাগুরা শালিখার বুনাগাতি  মাসুম ব্রিকস'র মালিক শহিদুল ইসলাম এলাকার ৩ শতাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে  হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা । সরকারের অনুমতি ছাড়াই এই ইট ভাটাটি এখানে স্থাপন করেছেন তিনি । সরেজমিন গিয়ে এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে ।

এ গ্রামের অন্ধ প্রতিবন্ধী ঝর্না খাতুন বলেন, ২০১৪ সালে মাসুম ব্রিকসের মালিক শহিদুল ইসলাম আমাকে স্বল্পমূল্যে ইট দেবার কথা বলে দশ হাজার ইট বাবদ ৪৫ হাজার টাকা গ্রহন করে। পরে আমাকে সে ২ হাজার ইট দেয় । তারপর বাকি ইট না দিয়ে নানা অজুহাত দেখিয়ে আমার সাথে ছলচাতুরি শুরু । এক পর্যায়ে আমি বাকি টাকা ফেরত চাইলে সে আমার সাথে নানা তাল বাহানা শুরু করে । কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও আমি কোন টাকা ফেরত পাইনি । খোজঁ নিয়ে জানতে পারলাম যে, সে অধিক মূল্যে অন্যের নিকট ইট বিক্রি করছে । বর্তমানে তার নিকট যোগাযোগ করলে অধিকাংশ সময় তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় ।

হাটবাড়ীয়া গ্রামের আব্দুর রউফ ম্ল্যোা জানান, বছর খানের আগে শহিদুল ইসলাম স্বল্পমূল্যে ইট দেবার কথা বলে আমার নিকট থেকে ৬০ হাজার ইট বাবদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছে । অথচ আমাকে কোন ইট না দিয়ে হয়রানি শুরু করে । দীর্ঘদিন আমি তার নিকট ঘুরাঘুরির পর বাধ্য হয়ে মাগুরা জজ আদালতে আইনের আশ্রয় নেই । বর্তমানে শহিদুল ইসলামসহ ৫ জনের নামে আসামী করে দায়ের করা মামলা বিচারাধীন রয়েছে ।

বুনাগাতির রেশমা খাতুন নামে ভুক্তভোগী জানান, গত ১২ মে ২০১৪ সালে শহিদুল ইসলাম আমাকে স্বল্পমূল্যে ইট দেবার কথা বলে ২৬ হাজার ইট বাবদ ১২ হাজার টাকা নেয় । পরে আমাকে সে কোন ইট না দিয়ে ঘুরায় । তার সাথে যোগাযোগ করলে পরে ইট দেবে বলে সে জানান । কিন্তু আজও আমি ইট পাইনি । তার ভাটায় গিয়ে দেখা করলে সে ইটের বাকি টাকা দেবে বললেও টাকা দেয়নি ।

ভাটার জমির মালিক জামিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ভাটা তৈরীর সময় আমাকে বিভিন্ন ভাবে ফুসলিয়ে ৪১ শতক জমি লিখে নেয়। যার মুল্য নির্ধারিত ছিল ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শহিদুল এ সময় আমাকে নগদ ৩ লাখ টাকা দেন। বাকি টাকা আজও পরিশোধ করেননি। আমি মানুষের দ্বারস্থ হয়েও এর কোন প্রতিকার পাইনি।

এ ব্যাপারে শহিদুল ইসলাম টাকা গ্রহনের কথা স্বীকার করেছেন । তবে তিনি জানিয়েছেন , ইট দেবার কথা বলে তিনি টাকা নিয়েছেন । এটা নিয়ে অভিযোগের কিছু নেই।

মাসুম ব্রিকস মালিক শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার ,আপনারা যা খুশি করতে পারেন’ ।

তিনি জানান , আমি যাদের নিকট থেকে ইট দেয়া বাবদ টাকা নিয়েছি তাদের পর্যায় ক্রমে ইট দেব । কিছু সমস্যার কারণে ইট দেয়া বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে বুনাগাতির ইউপি চেয়ারম্যান বখতিয়ার লস্কর বলেন , তার বিষয়ে এলাকার অনেকে অভিযোগ দিয়েছে । তাকে নিয়ে একাধিক বার শালিশ হলেও ভুক্তভোগীরা কেউই কোন সুফল পাইনি । আমি ভুক্তভোগীদের আইনের মাধ্যমে গিয়ে সমাধান করতে বলেছি


(ডিসি/এস/জানুয়ারি২৮,২০১৬)