আজম খান


মুসা বিন শমসেরে মত লোকেরা এই দেশের মানুষের সাইকোলজি সবচাইতে ভাল বুঝে। জানে এই দেশের মানুষ তেলা মাথায় তেল দিতে প্রস্তুত থাকে। ধনীদের কোন অপরাধকে আমলে নেয়া হয় না। তো এই লোক নিজের নামধাম ফুটাইতে সব সময়ে আমার ধারনা মতে কিছু হলুদ সাংবাদিকরে টাকা দিয়ে তার অর্থ বিত্ত সম্পর্কে পত্রিকায় নিউজ করাইতো। সে মেলা টাকার মালিক এইটা সত্য। কিন্তু যতটা ফাটায় তার ধারে কাছেও না। ডাটকো নামে তার একটা আদম ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। মুসা বিন শমসের বাংলাদেশের প্রথম আদম ব্যাবসায়ী এইটাও সত্য। মধ্যপ্রাচ্যে সহ নানা জায়গায় শ্রমিক পাঠায়ে সে মূলত যা কামানোর কামাইছে।

সেই সব সংবাদের কন্টেন্ট আবার অদ্ভুত। তার জুতায় সোনা, ঘড়ি হীরার, শার্টের বোতাম স্বর্নের, এই ধরনের। নিতান্তই নিম্ন রুচির মানুষের টাকা হইলে যা করে আর কি।
নাম ধাম ফুটাইতে সে নানা দেশের প্রধানদের সাথে ছবিও তুলছে। ইউরোপের রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে একটা ছবি তোলা কোন ঘটনা না। এই তো দুইদিন আগেও এক পত্রিকায় দেখলাম সুইজারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী একা একা ট্রেনের অপেক্ষায় ষ্টেশনে দাঁড়াইয়া আছে। তবে পুতিনের সাথে একটা ছবি দেখছিলাম আমার ধারনা ঐটা ফটোশপের কাজ।

এই লোক মহা ধুরন্ধর। বুদ্ধিমান না হইলে আবার ধুরন্ধর হওয়া যায় না। সে সিদ্ধান্ত নিলো লেবার পার্টির ইলেকশন ক্যাম্পেইনে ৫ মিলিয়ন পাউণ্ড দান করবে। পুরা ব্রিটেন তো ছার, ইউরোপের সব সংবাদমাধ্যমে হৈ হৈ রৈ রৈ পড়ে গেল। লেবার পার্টি খুব আন্তরিকতার সাথে ধন্যবাদ দিয়া সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জানাইলো, ব্রিটেনের আইন অনুসারে কোন রাজনৈতিক দল বিদেশী কোন নাগরিকের ডোনেশন নিতে পারে না। তাই তারা মুসা বিন শমসেরের ৫ মিলিয়ন পাউন্ড নিতে পারছেন না বলে দুঃখিত।
ঐদিকে মুসা বিন শমসের কিন্তু ঘরে বসে হাসতেছেন। টাকা দিতে হইলো না কিন্তু নাম ঠিকই ফাটলো। আরে বেকুবের দল, টাকা দিতেই চাইছিলেন এই কারনে যে টাকাটা আসলে দিতে হবে না।

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হইছে। শেখ সেলিমের মেয়েরে ছেলের সাথে বিয়ে দিছেন। তবু মনের কোনায় খচখচানি। শেখ হাসিনার ভরসা নাই। এই ভদ্রমহিলা আত্মীয়-স্বজন গুনেন না। এরমধ্যে আবার বইলা দিছেন শেখ রেহানা এবং উনার ছেলে-মেয়ে ছাড়া কেউ তাদের পরিবার নন।

দুশ্চিন্তায় ঘুম হয় না। কখন বাজে বারোটা, কখন বাজে বারোটা। চিন্তা ভাবনা কইরা এদিক ওদিক একটু নাড়াচাড়া করে দুদকের দৃষ্টি আকর্ষন করলেন। দুদক তারে ডেকে পাঠালো। সেখানে গিয়ে তিনি এক মহা আর্থিক হিসেব দিলেন। যা আছে তা দিলেন। যা নাই তাও দিলেন। এরমধ্যে সবচাইতে বড়টা হচ্ছে সুইস ব্যাংকে ৭ বিলিয়ন ডলার আটকে আছে।

বাংলাদেশী টাকায় যাপ্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা। উদ্দেশ্য বুঝানো, যার এত টাকা আটকায়ে থাকলেও এইটারে বালস্য বাল মনে করে নিশ্চিন্তে আছে তার আসলে ঠিক কত টাকা আছে বুঝে নাও। ম্যাসেজটা আসলে দেয়া হইছে আমার মতে শেখ হাসিনারে, আমারে ঘাইটো না।

ঐদিকে দুদকের মাথা খারাপ, কয় কি ব্যাডায়। লাগাও খোঁজ। সুইজারল্যান্ডের আইন অনুসারে শুধু মাত্র কোন দেশের সরকার সরাসরি অনুরোধ করলে তারা ব্যাক্তির ব্যাংক একাউন্টের হিসাব দেয়। তারা অনেক খুঁজাখুঁজি করে দুদককে জানালো, এই নামে আমাদের এখানে কোন একাউন্ট নাই।

কি বুঝলেন?

(অ/জানুয়ারি ২৮, ২০১৬)