পীরগঞ্জ (রংপুর) থেকে গোলাম কবির বিলু : মথুর চন্দ্র বর্মন (৫০) পেশায় জাত কৃষক। বছরের সব সময়ই তিনি কৃষি ফসলের চাষ নিয়েই জমিতে থাকছেন। স্বচ্ছল এ কৃষক বর্তমানে লাভজনক এক ফসলে হাত দিয়েছেন। তা হলো বছরব্যাপী থাই পেয়ারার চাষ। ইতিমধ্যেই তিনি লাভের মুখও দেখেছেন।

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের দ্বারিকাপাড়া গ্রামের স্বচ্ছল কৃষক মথুর চন্দ্র বর্মনের বসত। পড়ালেখা বেশী দূর এগোয়নি। তবে তিনি কৃষি ফসল চাষে যথেষ্ট সিদ্ধহস্ত। ফসলে হাত দেয়া মানেই বাম্পার ফলন। তার চাষাবাদের প্রমানও পেয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। তাই উপজেলা বিভাগও তার উপর আস্থা রেখে বছরব্যাপী থাই পেয়ারা চাষের জন্য তাকে উৎসাহিত করে।

প্রায় বছর খানেক আগে মথুর চন্দ্র দ্বারিকাপাড়ায় তার নিজস্ব ৩ একর জমিতে ওই পেয়ারা চাষের প্রস্তুতি নেয়। উপজেলা কৃষি বিভাগ তাকে ১ বিঘা জমিতে থাই পেয়ারার চাষ করতে একটি প্রদর্শনী দিয়েছে। তাকে ২’শ ৫০ টি পেয়ারার কলম চারা, ভার্মি কম্পোষ্ট (কেঁচো সার) এবং কিছু পরিমান রাসায়নিক সার- টিএসপি, পটাশ দিয়েছে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগ রোগ-বালাই দমনে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বছরব্যাপী থাই পেয়ারা বছরে ৪ বার গাছে ধরে। মওসুমের সময় প্রতি কেজি পেয়ারা ৭০/৮০ টাকায় বিক্রি হয়। অন্য সময় প্রতি কেজি ১০০/১২০ টাকায় বিক্রি হয়। ২/৩ টি পেয়ারার ওজন এক কেজি বলে জানা গেছে। আর প্রতিটি পেয়ারা গাছের চারা একবার লাগালে ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ফলন দেয়। ফলে চারার ক্ষেত্রে চাষীকে আর ব্যয় করতে হয় না। জমিতে প্রয়োজন মত পানি সেচও দিতে হয়।

এ ব্যাপারে মথুর চন্দ্র জানান- কলার চাষে ব্যাপক কষ্ট আর লাভও কম, ঝুঁকিও বেশী। পক্ষান্তরে বছরব্যাপী থাই পেয়ারা চাষ করে আমি আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক এবং রোগ-বালাই কম হওয়ায় পরিশ্রমও কম হচ্ছে। সারা বছরই পেয়ারার ফলন হওয়ায় বিক্রিও ভাল হয়। তবে চারার মূল্য বেশী।

তারপরেও অন্যান্য চাষ কমিয়ে দিয়ে থাই পেয়ারার চাষ বৃদ্ধি করবো। বর্তমানে আমার বাগানে ২ হাজার ৪’শ টি গাছ রয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমীর চন্দ্র ঘোষ বলেন- থাই পেয়ারার কলম চারা হয়। এটি জমিতে লাগানোর এক বছর পরেই ফলন শুরু হয়। চাষীদের কাছে জেনেছি, পেয়ারাটি বেশ লাভজনক। চলমান উৎপাদনের কারণে মওসুমের আগে-পরে ওই চাষী ভাল মুল্য পাচ্ছে। পেয়ারাটি চাষে কৃষি বিভাগ অনেককে উৎসাহিত করছে।

(জিকেবি/এএস/জানুয়ারি ২৯, ২০১৬)