ডেস্ক রিপোর্ট : মানুষের শরীরে এক নিরব ঘাতক কিডনি ফেইলুর বা রেনাল ফেইলুর। আমরা সকলেই কমবেশি জানি এ রোগের ভোগান্তি কতটা নির্মম। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে সহজেই এ রোগ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

কিভাবে কিডনি সুস্থ রাখা সম্ভব :

১। কর্মঠ থাকুন : আপনার শরীরকে কর্মঠ ও সতেজ রাখুন। এজন্য নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং করা বা সাঁতার কাটার মতো হাল্কা ব্যায়াম করুন। কর্মঠ ও সতেজ শরীরে কিডনি রোগ হবার ঝুঁকি খুব কম থাকে।

২। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন : ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর শতকরা ৫০ জনেরই কিডনি রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা থাকে। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনি নষ্ট হবার ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন, নিয়মিত আপনার রক্তের সুগার পরীক্ষা করিয়ে দেখুন তা স্বাভাবিক মাত্রায় আছে কিনা।

৩। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন : অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ কিডনি ফেইলুর হবার প্রধান কারণ। তাই এ রোগ থেকে বাঁচতে অবশ্যই আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কোন কারণে তা ১২৯/৮৯ মি. মি. এর বেশি হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং তদসংক্রান্ত উপদেশ মেনে চললেই সহজেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

৪। পরিমিত আহার এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন : পরিমিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কিডনি রোগ হবার ঝুঁকি কমে যায়। হোটেলের তেল-মশলা যুক্ত খাবার, ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে বিরত থাকুন। খাবারে অতিরিক্ত লবণ পরিহার করুন। অতিরিক্ত ওজন কিডনির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, তাই সুস্থ থাকতে ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসুন।

৫। ধূমপান পরিহার করুন : ধূমপায়ীদের কিডনিতে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা অধূমপায়ীদের তুলনায় শতকরা ৫০ গুণ বেশি। ধূমপানের কারণে কিডনিতে রক্তপ্রবাহ কমে যেতে থাকে। ফলে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পেতে শুরু করে।

৬। অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন : অনেকেই অপ্রয়োজনে দোকান থেকে নানা ধরনের ওষুধ কিনে সেবন করেন। এদের মধ্যে ব্যথার ওষুধ শীর্ষ তালিকায় রয়েছে। সব ওষুধই কিডনির জন্য কমবেশি ক্ষতিকর, আর এর মধ্যে ব্যথার ওষুধ সবার চেয়ে এগিয়ে। তাই যে কোন ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই নিবন্ধিত চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নিন।

৭। নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করান : কারো যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বেশি এবং পরিবারের কেউ কিডনি রোগে আক্রান্ত থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে তার কিডনি রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এসব কারণ থাকলে অবশ্যই নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করাতে হবে।

কিডনি ফেইলুর হয়ে গেলে ভালো করার কোন সুযোগ নেই। তবে ডায়ালাইসিস কিংবা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। তাই এই রোগ এড়িয়ে যাবার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াটাই হবে প্রতিটি সুস্থ মানুষের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ।

(ওএস/এইচআর/জুন ০১, ২০১৪)