নিউজ ডেস্ক : একুশে গ্রন্থমেলায় আসছে তরুণ লেখক ও সাংবাদিক গাজী মুনছুর আজিজের ভ্রমণের বই ‘অনন্য আরব’। প্রচ্ছদ করেছেন দেওয়ান আতিকুর রহমান। বইটিতে গাজী মুনছুর আজিজের সম্প্রতি ভ্রমণ করা সৌদি আরবের মক্কা, মদিনা, জেদ্দা, তায়েফসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা ও রঙিন আলোকচিত্র রয়েছে।

তার প্রকাশিত গ্রন্থ : রূপসী বাংলার রূপের খোঁজে (ভ্রমণ); পজিটিভ বাংলাদেশ (প্রতিবেদন); ভ্রমণনে দিন (ভ্রমণ); ফাদার মারিনো রিগন (জীবনী); সহলেখক বাংলাদেশ ভ্রমণসঙ্গী; ভুটান দার্জিলিং ও অনান্য ভ্রমণ (ভ্রমণ); ৭১-এর খ-চিত্র (মুক্তিযুদ্ধ)।

বর্তমানে কর্মরত আছেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে। পহেলা ফেব্রুয়ারি খুলনার দিঘলিয়ার চন্দনীমহল গ্রামে তার জন্ম। বেড়েওঠা ও পড়াশোনা সেখানেই। পৈতৃক বাড়ি চাঁদপুরের নানুপুর গ্রাম। বাবা মো. মুনছুর গাজী; মা মরিয়ম বেগম। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। পেশা সাংবাদিকতা হলেও ভ্রমণ তার নেশা। পাখি দেখতে ঘুরে বেড়ান দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। পাখির কথা লিখেন নিয়মিত। এছাড়া ঘুরে বেড়ান দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির খোঁজে এবং তা তুলে ধরেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। নিজের সম্পাদনায় প্রকাশ করেন ঈদের শুভেচ্ছাপত্র ‘ঈদ উৎসব।’

২০০১ সালে চাঁদপুরে প্রতিষ্ঠা করেন গাজী আবদুর রহমান পাঠাগার। এর উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, গাছেরচারা রোপণ, ইলিশ অড্ডাসহ বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক কাজ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য ‘বজলুর রহমান স্মৃতিপদক’ প্রতিযোগিতায় তার একাধিক প্রতিবেদন স্থান পেয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদন’ বইয়ে। পেয়েছেন ডি. নেট, পিএসটিসি ও এমসিসি সংস্থা আয়োজিত নাগরিক সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রতিযোগিতায় ‘রাইট থ্রি নাগরিক সাংবাদিকতা পুরস্কার।’

প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বাংলা একাডেমির তরুণ লেখক প্রকল্প থেকে। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পাখিশুমারিসহ পাখি বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। জড়িত আছেন বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব, ভ্রমণ বাংলাদেশ- এর সঙ্গেও। দেশের বাইরে ভ্রমণ করেছেন ভুটান, ভারত, সৌদি আরব।

তাকে নিয়ে ভ্রমণের দিন বইয়ে কবি আসাদ চৌধুরী লিখেছেন- গাজী মুনছুর আজিজের পায়ের নিচে শর্ষে-দানা কুট কুট করতে থাকে। ওর দৃষ্টি বাংলাদেশের শ্যামল নিসর্গের অপরূপ রূপ দেখে কখনোই ক্লান্ত হয় না। জীবনানন্দ দাসের রূপসী বাংলা এখনও যে মোহ সৃষ্টি করে তার কিছুটা গাজী মুনছুর আজিজের লেখায় ধরা পড়ে। ঘুরতে-ফিরতে আমারও ভালো লাগে, তবে তাঁর সামনে তা বলার মতোই নয়। গাজী মুনছুর আজিজ দেখতে জানেন, লিখতে জানেন। আমি তাঁর লেখা পড়ে নিজের চোখে দেখার স্বাদ পাই।

পাখিবিদ ও অভিযাত্রী ইনাম আল হক ভুটান দার্জিলিং ও অন্যান্য ভ্রমণ বইয়ে লিখেছেন- গাজী মুনছুর আজিজকে আমি বাংলাদেশের মাটি দিয়ে গড়া অসামান্য এক সাদামনের মানুষ বলে জানি। তিনি সোজা সরল কথা বলেন, সহজ ভাষায় লেখেন। তাঁর বয়স কম, বই অনেক; প্রিয় বিষয়বস্তুর তালিকাটা আরও বড়। এ দেশের কোনো কিছুই তিনি তুচ্ছ মানেন না; যা চোখে দেখেন সবই লিখে যান। এ দেশের কাদামাটি, কৃষক, কুমার, তাঁতি, ফসলের জমি, বন, বাদা, মাছ, পাখি, পোকামাকড়, এসবেরই খ--চিত্র তাঁর বইয়ে স্থান পায়। মন্দ-ভালোর তর্ক না তুলে কেবল বর্ণনা করেই তৃপ্ত তার লেখনী। মাটিতে চোখ রেখে হাঁটেন তিনি; মনে হয়, মাটির গভীরে তার শিকড় আছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর অনেক মিল; নবীন এ দেশের মতোই অর্জনের চেয়ে তাঁর সম্ভাবনাটা অনেক বড়। জগতের নজর কাড়ার মতো বড় কিছু করে ফেলার সময় এখনও আসেনি তাঁর। তবে যা করা হয়েছে তা-ও কম নয়।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক ৭১-এর খ-চিত্র বইয়ে লিখেছেন- তরুণ সাংবাদিক গাজী মুনছুর আজিজ পেশাগত দায়িত্ব পালনের সুবাদে যতটা না, তার চেয়ে বেশি অন্তরের তাগিদে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সন্ধান করে ফিরছেন, নানা তথ্য ও ঘটনা পাঠকদের সামনে মেলে ধরছেন, তাঁর প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃক স্বীকৃতিও অর্জন করেছে। এখানে দুই মলাটের মধ্যে নির্বাচিত যেসব রচনা ও প্রতিবেদন স্থান পেয়েছে তা’ প্রবীণ পাঠকদের হয়তো স্মৃতিভারাতুর করবে, তবে নিঃসন্দেহে নবীন পাঠকদের উদ্দীপীত করবে জাতির গৌরব গাথার সঙ্গে নিবিড় সংযোগ দ্বারা।

আলোকচিত্র : নাসির আলী মামুন

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৬)