মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরের আলহেরা মহিলা মাদ্রাসার সামনে টেকেরহাট-রাজৈর বাইপাস সড়কের উপর শনিবার রাতে অজ্ঞাত দুস্কৃতিকারীদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে একই উপজেলার স্বরমঙ্গল টেকেরহাট রাশিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক আবুল বাসার (৫৫) ও অপর এক যুবকের (২২) নিহতের ঘটনায় রবিবার দুপুরে রাজৈর থানা পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার মোহসীন মুন্সি ফরিদপুরের সালতা উপজেলা চন্ডীবর্দ্দী গ্রামের ছেলে।

এছাড়াও নিহত অপর যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। সে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রাইদা গ্রামের কাওছার মোল্লার ছেলে বিল্লাল মোল্লা। রাতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ড ঘটনার ৪দিন আগে ৪ জন দুষ্কৃতকারী টেকেরহাট বন্দরের সবুজ বোডিং এ ভূয়া পরিচয়ে অবস্থান নেয়।
পুলিশ প্রাথমিক ধারণা করে, ঘটনার ২টি আগে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দুইজন বোডিং থেকে চলে যায়। শনিবার রাতে আবুল বাসারকে হত্যা করা পর কোন স্বাক্ষী না রাখার জন্য ঐ দুষ্কৃতকারী নিজের লোক বিল্লাল মোল্যাকেও হত্যা করা হয়। এসময় বিল্লাল মোল্যার পকেটে সবুজ বোডিং এর রুমের চাবি পাওয়া গেছে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানায়, রবিবার দুপুরে মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে নিহত বিল্লাল মোল্যার পরিচয় পাওয়া গেছে। সে কিলার গ্রুপের একজন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। ওসি আরো জানায়, নিহতের ক্ষত দেখে বোঝা যায় দুষ্কৃতকারীরা ছিলো পেশাদার কিলার। রাতেই ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি তৈরি পিস্তল, একটি চাইনিজ চাপাতী ও ছোড়ার কাঠের বাট উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনায় রবিবার দুপুরে নিহত আবুল বাসারের ভাই আবু বকর মুন্সী বাদী হয়ে শাহিন খোন্দকার নামের একজনকে প্রধান আসামী করে রাজৈর থানায় মামলা দায়ের করেছে।
নিহতের স্ত্রী শাহীনুর বেগম জানান, ফরিদপুরের নব গঠিত সালতা উপজেলার ভড় বল্লভদী গ্রামের বল্লভদী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন খোন্দকার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি দেলোয়ার কাজী এক দলে কাজ করতো। পরবর্তীতে দুইজনের মধ্যে মতবিরোধ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আলাদা হয়ে যায়। এক পর্যায়ে দেলোয়ার কাজীর হাত ধরে জামাত নেতা আবুল বাসার আওয়ামীলীগে যোগ দেয়। এরই জের ধরে শাহিন খোন্দকার ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামীকে কিলার দিয়ে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার খোন্দকার ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে গ্রাম্য দলাদলির কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সালতা উপজেলার উত্তর চন্ডীবর্দ্দী গ্রামের মৃত রোকন মুন্সির ছেলে মোহসীন মুন্সিকে পুলিশ গ্রেফতার করা হয়েছে। এর সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নিহত আবুল বাসারের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের সালতা উপজেলার ভড় বল্লভদী গ্রামে। সে চাকুরীর সুবাদে সস্ত্রীক টেকেরহাটে ঘটনাস্থলের পাশে আবুল হোসেনের বাসায় ভাড়াটে হিসেবে থাকবো।
(এএসএ/এএস/জুন ০১, ২০১৪)