অতিরিক্ত ফি ফেরতের দাবিতে শিক্ষার্থীদের লিখিত আবেদন
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরে চলতি এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা অতিরিক্ত ফি ফেরতের দাবী জানিয়ে লিখিত আবেদন করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা।
উপজেলার হরিপুর দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন ও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ৩৪ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শেহেলী লায়লা’র নিকট লিখিত আবেদন করেছেন।
ছাত্র-ছাত্রীরা জানান, বিলম্ব ফি, অকৃতকার্য বিষয়ে জরিমানার নামে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ইচ্ছেমত অর্থ। সম্প্রতি আদালত স্ব-প্রণোদিত হয়ে ‘এসএসসি পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি আদায় কেন বেআইনী নয়’ মর্মে রুল জারি করলেও হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে অধ্যক্ষ অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। এসএসসি ফরম পূরণের সময় নির্ধারিত টাকা অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে। ৩ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার ৮শ টাকা আদায় করা হয়।
তারা আরো জানান, শিক্ষামন্ত্রী অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকা পেরত প্রদানের আদেশ দিলে আমরা বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন স্যারের নিকট অতিরিক্ত টাকা ফেরত চাই। তিনি আমাদের গালিগালাজ করে পুলিশের ভয়ভীতি দেখায়। পরবর্তীতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. মকবুল হোসেনকে জানানো হলে তিনিও একই আচরন করেন। সবশেষ অতিরিক্ত টাকা ফেরত পেতে ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বোর্ড নির্ধারিত বিষয় প্রতি ফি ৬৫ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষা ফি প্রতি বিষয় ৩০ টাকা, মূল সনদপত্র ফি ১০০ টাকা, বয় স্কাউট/গার্ল গাইড ফি ১৫ টাকা, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা এবং কেন্দ্র ফি ব্যবহারিকসহ ৩০০ টাকা, ব্যবহারিক ছাড়া ২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র মতে, সম্প্রতি আদালতের জারি করা রুলের পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি মারফত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সতর্ক করা হয়।
এসব কিছুকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হরিপুর দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজে নিজেদের খেয়াল খুশিমত ফি আদায় করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বোর্ড নির্ধারিত ফি আদায় না করে তাদের ইচ্ছেমতো আদায় করেছে।
৩৫০০ থেকে ৩৮০০ টাকা ফি আদায় করা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে। নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিষয় প্রতি ৩০০ টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বোর্ড নির্ধারিত ফরমফিলাপের শেষ তারিখের আগেই নিজেদের নির্ধারিত 'শেষ তারিখ' নির্ধারণ করে অভিনব কায়দায় টাকা নেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে দূর্গাদাস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আজকে হাফ স্কুল ছুটি হয়ে গেছে। আপনি শনিবার আসেন গভনিং বডি সভাপতিকে নিয়ে সাক্ষাতে কথা বলবো’।
গভনিং বডি সভাপতি ও হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘আপনি খোঁজ নিয়ে অন্যান্য স্কুলের চেয়ে আমরা ফি কম নিয়েছি। ২৫০০ টাকা এবং অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা মোট ২৮০০ টাকা নেয়া হয়েছে’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শেজেলী লায়লা জানান, ‘এসএসসি পরীক্ষার্থীদের লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
(এসএইচএম/এএস/ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬)