বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা এখনো কাটেনি। মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি এবং মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি’র সদস্যরা। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে জেলার নাইক্ষ্যংছড়িতে।

এদিকে নিহত পাইনছড়ি ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার মিজানুর রহমানের মৃতদেহ রাষ্ট্রীয়ভাবে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সোমবার সকাল নয়টায় কক্সবাজার বিজিবি সেক্টর থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাড়িতে করে আনা হবে কর্মস্থল নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ ব্যাটালিয়ানে।

ব্যাটালিয়ান মাঠে বীর সৈনিকের প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানাবেন বিজিবি’সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা। তারপর নিহতের প্রথম জানাজা শেষে হেলিকপ্টারে করে মিজানুরের মৃতদেহটি নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে। সেখানে দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে এই বীর সৈকিককে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবি ৩১ ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্ণেল শফিকুর রহমান।

এদিকে নিহত বিজিবি সদস্যকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা। ব্যাটালিয়ানের মাঠেই হবে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা অনুষ্ঠান। শ্রদ্ধা জানাতে ব্যাটালিয়ানে বিজিবি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও স্থানীয় উৎসুক মানুষেরা ভীড় জমিয়েছেন।

অপরদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা আজও কাটেনি। সীমান্তের দৌছড়ি, পাইনছড়ি, তুমব্রু এবং বাইশফাঁড়ি সীমান্তঞ্চলে জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল অব্যাহত রেখেছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ, সেনাবাহিনীও ভারি অস্ত্রশস্ত্র রণসজ্জায় সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। সীমান্তের ৫০ থেকে ৫২ নাম্বার সীমানা পিলারের কয়েকটি পয়েন্টে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মাটিতে পুতে রাখা কয়েকটি মাইন স্থানীয়দের সহায়তায় তুলে নিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঘরবাড়ি ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া সীমান্ত অঞ্চলের মানুষেরাও এখনো উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় ঘরে ফিরেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়িতে দৌছড়ি সীমান্তে বিজিবি টহল দলের উপর গুলিবর্ষণ করেন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পাইনছড়ি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান মারা যান। মৃত্যুর পর অস্ত্র’সহ বিজিবি সদস্যের মৃতদেহ নিয়ে যান মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীরা। ঘটনার তিনদিন পর শনিবার বিকেল পাঁচটায় বিজিবির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃতদেহ হস্তান্তর করেন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

(ওএস/এইচআর/জুন ০২, ২০১৪)