স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃক্ষমানব আবুল বাজনদারের প্রথম অস্ত্রোপচার শনিবার সম্পন্ন হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর তিনি ভালো আছেন এবং আঙুলগুলো কাজ করবে বলে চিকিৎসকেরা আশা করছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান আবুল কালামের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল আবুল বাজনদারের ডান হাতের পাঁচটি আঙুলেই অস্ত্রোপচার করে। সকাল সোয়া নয়টা থেকে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় আবুলের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।

চিকিৎসকেরা জানান, প্রথমে আবুলের বুড়ো আঙুল ও তর্জনীতে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত ছিল। অস্ত্রোপচার কক্ষে চিকিৎসকদের তাৎক্ষণিক পরামর্শে আবুলের ডান হাতের পাঁচটি আঙুলেই অস্ত্রোপচার করা হয়। তারা ভয় পাচ্ছিলেন যে, অস্ত্রোপচারের পর আঙুলগুলো শনাক্ত করা যাবে কি না। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর আবুল বাজনদারের ডান হাতের আঙুলগুলো আলাদা করা গেছে। আশা করা হচ্ছে, আঙুলগুলো কাজ করবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান আবুল কালাম বলেন, আবুল বাজনদারের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। তাঁকে রিজিওনাল অ্যানেসথেসিয়া (হাত অবশ করে অস্ত্রোপচার) দেওয়া হয়। প্রথমে তিনি খুব ভয় পাচ্ছিলেন, পরে তিনি বেশ সাড়া দেন। আবুল বাজনদারের আরও অস্ত্রোপচার হবে বলে জানান আবুল কালাম।

চিকিৎসকেরা বলছেন, আবুল বাজনদারসহ বিশ্বে এখন পর্যন্ত এ ধরনের চারজন রোগীকে শনাক্ত করা গেছে। গণমাধ্যমে আসা ইন্দোনেশিয়ার বৃক্ষমানব গত ৩০ জানুয়ারি মারা গেছেন।

চিকিৎসকদের ধারণা, আবুল বাজনদার ‘এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস’ রোগে আক্রান্ত। রোগটি ‘ট্রি-ম্যান’ (বৃক্ষমানব) সিনড্রম নামে পরিচিত। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ রোগ হয়। ১০ বছর ধরে আবুল এই রোগে ভুগছেন। তাঁর হাত ও পায়ের আঙুলগুলো গাছের শিকড়ের মতো হয়ে গেছে এবং দিনে দিনে তা বাড়ছে। তাঁকে গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসক আবুল কালাম জানান, আবুলের বায়োপসি পরীক্ষায় ক্যানসারের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাঁরা অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬)