লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটে এক স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির (ইভটিজিং) দায়ে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছয় যুবককে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিদের রবিবার ভোরে লালমনিরহাট জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

জেলার সদর থানা পুলিশ জানায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার রানা হামিদ (১৬) ও নিরবের (২০) সঙ্গে ফোনে পরিচয় হয় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সাতদরগা দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর। শনিবার তিস্তা সড়ক সেতুর টোলপ্লাজার দিকে তারা দেখা করে। সেখানে ওই ছাত্রী তার প্রেমিকের সঙ্গে আলাপ ও হাঁটাহাঁটি করছিল।

পুলিশ জানায়, এসময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লালমনিরহাটের গোকুন্ডা ইউনিয়নের কাচারীপাড়ার আফছার আলীর ছেলে মিনারুল ইসলাম (২৩) তাদের পথরোধ করে। পরে একই ইউনিয়নের বালাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিনারুলের সহযোগী নজীর হোসেনের ছেলে দুলাল হোসেন (৩০), ওমর আলীর ছেলে আলম মিয়া (২৪), মোজাম্মেল হকের ছেলে আশরাফুল আলম (২৪), আছর আলীর ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২৪), হানিফ আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান (২২) ঘটনাস্থলে এসে ওই স্কুলছাত্রীকে গালাগাল করে। প্রেমিক ও তার সঙ্গে থাকা এক যুবককে মারধর করে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তারা দুই যুবককে তাড়িয়ে দেয়। বাসে উঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই স্কুলছাত্রীকে মিনারুল তার মোটরসাইকেলে তুলে পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ের দিকে নিয়ে যান। এসময় সেখানে আসেন একই এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আনারুল ইসলাম (৩০)। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই স্কুলছাত্রী চিৎকার করতে থাকে। প্রায় ৩০০ গজ দূরে থাকা হাইওয়ে পুলিশের টহলদল চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এগিয়ে যায়। পরে কৌশলে ওই সাত যুবককে আটক করে। এরপর তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম এ রায় দেন।

লালমনিরহাট সদর থানার এসআই হাফিজুর রহমান বলেন, তিস্তা সড়কসেতুর টোলপ্লাজার পাশে টহলরহ পুলিশের হাইওয়ে একটি দল এক মেয়ের চিৎকার শুনতে পায়। পরে ওই মেয়েকে উদ্ধার করে এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাত যুবককে আটক করে পুলিশ।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে ভিকটিম ও সাত যুবকের প্রত্যেকের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ছয় যুবক নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। অপর এক যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬)