শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের চরচটাং গ্রামে এক কৃষকের পুকুরে ইলিশ মাছ ধরা পড়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ।  এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার লোক এসে ভীড় জমিয়েছে ওই কৃষকের বাড়িতে।

সরেজমিন পরিদর্শন করে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের চরচটাং গ্রামের আফিল উদ্দিন মাদবরের ছেলে হাবিবুর রহমান মাদবর ৬ মাস আগে তার বাড়িতে একটি পুকুর খনন করেন। ৩/৪ মাস আগে সে ওই পুকুরে রুই, কাতলা ও সিলভারকার্ভ মাছের পোনা ছাড়ে। গত মঙ্গলবার পুকুরের মাছ পচির্যার জন্য পুকুর মালিক হাবিব মাদবর পুকুরে জাল ফেলে। তখন অন্যান্য মাছের সাথে ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। সেখান থেকে তিনি দুইটি মাছ রেখে বাড়িতে রান্না করে খায়। প্রতিবেশীদেরও এই মাছ খাওয়ান তিনি। সম্পূর্ণই ইলিশের স্বাদ মিলে ওই মাছে। এরপরই এলাকায় ছড়িয়ে পুকুরে ইলিশ মাছের কাহিনী। সেই থেকেই জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন জাগতে থাকে কিভাবে পুকুরে ইলিশ মাছ থাকে। বিষয়টি জেলা মৎস বিভাগ পর্যন্ত পৌছলে শুক্রবার বেলা ১১ টায় জেলার সংবাদ কর্মী ও মৎস কর্মকর্তাসহ হাজারো জনতার সামনে পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরে প্রমাণ মিলে ইলিশ থাকার। পর পর দুই বার জাল ফেলায় প্রত্যেক বারই উঠে আসে ৮/১০টি করে বিভিন্ন আকারের ইলিশ।

ইতিপূর্বে দেশের চাদঁপুর, চট্টগ্রাম, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলায় কৃত্রিম উপায়ে ইলিশের চাষ করার পদক্ষেপ নিয়েও ব্যর্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কিন্ত শরীয়তপুরের এই কৃষকের পুকুরে অলৌকিকভাবে ইলিশ উৎপাদন হওয়ায় বিষয়টি নতুন করে ভেবে দেখার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন মৎস্য গবেষকরা।

কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমি দীর্ঘ দিন প্রবাসে কাটিয়ে গত বছর বাড়ি আসি। ৬ মাস আগে আমি নিজ বাড়িতে একটি পুকুর খনন করি। ৪ মাস আগে মাছ চাষের জন্য পুকুরে জন্য রুই, কাতলা, মৃগেল ও সিলভারকার্ভ মাছের পোনা ছাড়ি। মাছ কতটুকু হয়েছে তা দেখার জন্য গত মঙ্গলবার আমি জেলে ভাড়া করে পুকুরে জাল ফেলি। তখন অন্যান্য মাছের সাথে কয়েকটা ইলিশ মাছও ধরা পরে। পুকুরে ইলিশ দেখে প্রথমে আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি। পরে এই মাছ খেয়ে দেখি এর স্বাদ অবিকল ইলিশের মতই। বিষয়টি এলাকার মানুষ জানার পরে আজ আবার সাংবাদিক ও মৎস অফিসারের সামনে পুকুরে জাল ফেলে আগের মত ইলিশ পাওয়ায় সকলে বিষয়টি বিশ্বাস করেছে।

শরীয়তপুর সহাকরী মৎস কর্মকর্তা সিরাজুল হক বলেন, বিজ্ঞান সম্মতভাবে পুকুরে ইলিশ উৎপাদনের কোন সম্ভাবনাই নেই। তারপরেও হাবিবুর রহমানের পুকুরে ইলিশ মাছ ধরা পরায় বিষয়টি নতুন করে ভেবে দেখার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমি এই মাছের ঘ্রান নাকে নিয়ে দেখেছি, এতে অবিকল ইলিশের গন্ধ রয়েছে। এর আকার আকৃতিও অবিকল ইলিশের মত। আমি এই মাছ নিয়ে চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রে পাঠাবো। সেখানে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে বলা যাবে এটা কি আসল ইলিশের প্রজাতি নাকি ইলিশ আকৃতির অন্য কোন গোত্রের মাছ।

(কেএনআই/এএস/০৪ মার্চ, ২০১৬)