স্টাফ ‍রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সততাই শক্তি। সততা থাকলে  যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায়। তেমনি জোর গলায় কথাও বলা যায়।

তিনি বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি কথা বলতেন- ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না। আমরা কারও কাছে হাত পেতে চলতে চাই না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াব। মাথা উঁচু করে চলব।’

শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ৯৬তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

সততার কারণেই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়তে যাচ্ছিলাম, সততা ছিল বলেই তা মোকাবিলা করতে পেরেছি। পদ্মা সেতুর মতো বিশাল প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়ন বাস্তবায়ন করতে পারছি ওই একটা কারণেই। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি হিসেবে এটা আমাদের গর্ব ও চ্যালেঞ্জ ছিল। তাই বলে ষড়যন্ত্র থেমে গেছে, তা কিন্তু না।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এই সরকারকে না হটিয়ে ঘরে ফিরবেন না। ৯২ দিন নিজের কার্যালয়ে বসে ৬৮ জন মানুষকে পোড়াল। এভাবে মানুষ পোড়ালে আল্লাহও নারাজ হন, এটা তাঁর জানা উচিত ছিল। নাকে খত দিয়ে তাঁকে ঘরে ফিরতে হয়েছিল। কাজেই এদের চরিত্র হচ্ছে অপরাধী-খুনি এদের রক্ষা করা, মদদ দেওয়া এবং তাদের নিয়ে চলা। আর নিজেরাও খুন ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করা। এরা তো দেশের কল্যাণে কোনো কাজ করতে পারে না। বা বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বে মর্যাদার নিয়ে চলবে, এটাও বোধ হয় তাদের পছন্দ না। ওই পরাজিত শক্তি, পুরোনো প্রভুদের তারা ভুলতেই পারে না। এটা সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের।’

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, একজন মানুষ তাঁর দেশের মানুষকে কত গভীরভাবে ভালোবাসতে পারেন, তার উদাহরণ বঙ্গবন্ধু। বাঙালি প্রত্যেক মানুষের মনের কথা বঙ্গবন্ধু জানতেন। এ দেশের মানুষও তাঁকে মন থেকে মানতেন। বাংলার মানুষ শোষিত হোক-বঞ্চিত হোক, বঙ্গবন্ধু তা কোনো দিনই চাননি।

আলোচনা সভায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শিশু-কিশোর সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের উচ্ছলতার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘১০ বছর আগে আমাদের শিশুদের চেহারা কেমন কেমন ছিল। এখন কোনো শিশুর চেহারায় বিষণ্নতা নেই। অনেক সুস্থ, অনেক অ্যাডভান্সড। এটা হচ্ছে সারা বাংলাদেশের চিত্র। মানুষের এই চিত্র, ছায়া পরিবর্তন করে দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। সেটাই গতকাল টুঙ্গিপাড়ায় লক্ষ করেছি।’

দেশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সত্যিকারই কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে। আপনি ঢাকা শহরের বস্তিগুলোতে যান, সেখানে কিন্তু ছেলেমেয়ে, শিশুদের চেহারায় কোনো বিষণ্নতা নেই। দেশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে এগিয়ে চলেছে।’ তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে এই দেশটাকে গড়ে তুলতে হবে। এখন ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন।

জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

(ওএস/এএস/মার্চ ১৮, ২০১৬)