বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের চিতলমারীতে শিক্ষককের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার সকালে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস বর্জন করেছে। ঘটনার পর স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ওই ছাত্রীকে অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়িতে তুলে দিয়েছেন।

এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা জানান, চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রী (১৪) ওই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারি শিক্ষক তাপস রানার কু’জনরে পড়ে। পরে ওই শিক্ষক ভালাবাসার প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীটির সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী ২ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। এরপর ছাত্রী তাপস রানাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে ওই শিক্ষক কৌশলে স্থানীয় এক ডাক্তারকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে জোর পূর্বক তার গর্ভপাত ঘটায়। পরে ওই ছাত্রী কোন উপায়ন্ত না পেয়ে মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় স্কুলে এসে হাজির হয়। এখবর শুনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা স্কুলের শ্রেণী কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস বর্জন করে। এঘটনার পর স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ওই ছাত্রীকে অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস রানার বড় ভাই শেখর রানার হাতে তুলে দিয়েছেন। এঘটনায় ছাত্রীর বাবা ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবস্থিত পুলিশ ফাঁড়িতে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোক্তার সরদার ঘটনার সত্যতার স্বীকার করে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস রানা ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্র নাথ রানার আপন ভাইপো।
এলাকার একাধিক প্রবীণ ব্যাক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, কিছুদিন আগে ওই স্কুলের লাইব্রেয়ান উজ্বল রায় এক ছাত্রীকে নিয়ে ছবি তুলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছিলেন। তখন ন্যায্য বিচার করলে আজ এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটত না বলে তারা দাবি করেন।
ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শেখ আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মেয়েটিকে শিক্ষক তাপস রানার বড় ভাইয়ে হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তারা সুষ্ঠ সমাধান না দিলে আইনের আশ্রয় নেয়া হবে।
এব্যাপারে ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরেন্দ্র নাথ রানা জানান, শিক্ষক তাপস রানাকে স্কুল পরিচালনা কমিটি তৎক্ষনাত সভা আহবান করে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। দু/একদিনের মধ্যে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তবে চিতলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার সরকার জানান, এঘটনাটি শুনেছি। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(একে/এএস/জুন ০৩, ২০১৪)