নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের ছাতনী গণহত্যা দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরা ছাতনী গ্রামে বাড়ি বাড়ি অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক গণধর্ষণ চালায়। পুরুষদের ধরে দুই হাত পিছনে বেঁধে ছাতনী স্লুইস গেইটে জড়ো করে। পরে তাদের  জবাই ও বেনোয়েট দিয়ে খুচিঁয়ে হত্যা করার পর এসিদ দিয়ে ঝলছে দেওয়া হয়। সেদিন এখানে প্রায় ৫’শ বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়। সেদিনের সেই বর্বরোচিত ও পৈশাচিকতা কথা আজও নাটোরের মানুষ স্মরণ করে। 

নাটোর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে ছাতনী গ্রাম। ১৯৭১ সালের ৩ জুন রাতে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা ছাতনী সহ আশেপাশের প্রায় ১০টি গ্রাম ফেলে ঘুমন্ত গ্রামবাসীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। অবাঙ্গালী হাফেজ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে নিরীহ গ্রামবাসীদের ধরে এনে ছাতনী স্লুইচ গেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে। তৎকালীন এমপি শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর আহ্বানে এসব গ্রামের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় স্বাধীনতা বিরোধী চক্র আক্রোশে ফেটে পড়ে এসব গ্রামের মানুষদের ওপর।
স্বাধীনতার পর ছাতনী স্লুইস গেইটের কাছে স্থানীয়ভাবে একটি স্মৃতি স্তম্ভ তৈরী করা হয়। প্রতিবছর এই দিনে স্মরন করতে ওই স্মৃতি স্তম্ভে স্থানীয়রা না অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। গত সরকারের আমলে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার সহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ওই ছোট স্মৃতি স্তম্ভটি বেঙ্গে আধুনিক স্মৃতি স্তম্ভ তৈরীর উদ্দোগ নেন। জেলা পরিষদ থেকে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হলেও গত চার বছরে এর নির্মণ কাজ শেষ হয়নি। অর্থাভাবে বর্তমানে স্মৃতিস্তম্ভের নির্মান কাজ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ছাতনী গনহত্যায় শহীদ পরিবারের অনেক সদস্যের অভিযোগ স্বাধীনতার ৪৩ বছরেও তারা কোন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পায়নি । শহীদ পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা সহ শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের অসমাপ্ত নির্মানকাজ সম্পন্ন করার দাবী জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাজেদুর রহমান খান জানান, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণের জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অর্থের যোগান না থাকায় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। চলতি জুনে টাকার যোগান পাওয়া গেলে স্তম্ভটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।

(এমআর/এএস/জুন ০৩, ২০১৪)