পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি : পীরগঞ্জে ইউপি নির্বাচনে কেউ ঝামেলা করলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। জনগন যাকে ভোট দিবেন, তিনিই নির্বাচিত হবেন। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে তিন স্তরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপরেও যদি কেউ ক্ষমতার দাপট, বল প্রয়োগ করার চেষ্টা করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে পীরগঞ্জ অডিটরিয়াম হলে নির্বাচন আচরন বিধি ও আইন শৃংখলা অবহিতকরন সভায় প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে রংপুরের এসপি আব্দুর রাজ্জাক পিপিএম ওই কথা বলেন।

এসপি তার অতীত কর্মস্থল জামালপুর জেলার নির্বাচনী সহিংসতা দমনের কথা উল্লেখ করে বলেন- আমি জীবনে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেইনি। উদ্ভুত পরিস্থিতি শান্ত করতে যা করা প্রয়োজন তাই করবো। এসপির বক্তব্যের সময় উপস্থিত ৪ শতাধিক চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থী মুহুর্মুহু করতালি দেয়। অনুষ্ঠানে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাহাতাব উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন। এ সময় এএসপি বি সার্কেল সাইফ, ইউএনও এসএম মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাচন অফিসার কে. এন রায় নিয়তি, র‌্যাব ও বিজিবি’র প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।

সুত্রে জানা গেছে, আগামীকাল বৃহষ্পতিবার পীরগঞ্জের ১১ টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওইসব ইউনিয়নের ১০৭ টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৮৭ টিই ঝুঁকি পূর্ন হিসেবে চিহ্নিত করে স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচনের সম্পন্ন করতে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।

উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইসব ইউনিয়নে পুরুষ ভোটার ৯৮ হাজার ৯৩৯ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৪১০ জন সর্বমোট ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৯ জন ভোটার এবারে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। দলীয়ভাবে আ’লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ১১ জন, বিএনপি মনোনীত ৯ জন, জাতীয় পার্টির ৮ জন, আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৪ জন, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ২ জনসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী মোট ৫৩ জন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আ’লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- চৈত্রকোল ইউপির জিয়াউর রহমান সবুজ; ভেন্ডাবাড়ীর আব্দুল হালিম সরকার; বড় দরগায়- মোতাহারুল হক বাবলু; কুমেদপুরে- আলহাজ্ব মোশফাক হোসেন খাঁন চৌধুরী ফুয়াদ; মদনখালীতে সামছুল আলম, টুকুরিয়ায় আতাউর রহমান মন্ডল, শানেরহাটে মিজানুর রহমান মন্টু; পাঁচগাছীতে- লুৎফর রহমান লতিফ; মিঠিপুরে এসএস ফারুখ আহম্মেদ, চতরায়- এনামুল হক প্রধান শাহীন এবং কাবিলপুরে রবিউল ইসলাম রবি; বিএনপির প্রার্থীরা হলেন- চৈত্রকোলের লিয়াকত আলী মন্ডল, ভেন্ডাবাড়ীর তৌহিদুল ইসলাম, বড় দরগার সোহেল রানা, মদনখালীর জাহিদুল ইসলাম, পাঁচগাছীর নজরুল ইসলাম, মিঠিপুরের রায়হান প্রধান, চতরার আব্দুল কাফি মন্ডল এবং কাবিলপুরের মাসুদ রানা; জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা হলেন- চৈত্রকোল ইউপির ইছাহাক আলী মাষ্টার (অবঃ); ভেন্ডাবাড়ীর মোস্তাফিজার রহমান; বড় দরগায়- ফারুক মিয়া; কুমেদপুরে- মকবুল হোসেন; টুকুরিয়ায় মিজানুর রহমান শাহীন; শানেরহাটে আবেদ হোসেন খাঁন মাজু; পাঁচগাছীতে- ওয়ালিউর রহমান সাকি; মিঠিপুরে হারুন অর রশিদ; চতরায়- জয়নাল আবেদীন এবং কাবিলপুরে লুৎফর রহমান। আ’লীগের বিদ্রোহীরা হলেন- কুমেদপুর ইউপির মোজাম্মেল হক লাল, পাঁচগাছী ইউপির লাবলু মন্ডল, মিঠিপুর ইউপিতে হাসান আলী সরকার এবং কাবিলপুর ইউপিতে শামছুল হক। বিএনপির বিদ্রোহীরা হলেন- চৈত্রকোল ইউপির আরিফুল ইসলাম ও ভেন্ডাবাড়ী ইউপির রবিউল ইসলাম রবি।

এবারের নির্বাচনে উল্লেখিত ইউনিয়নের ১০৭ টি ভোট কেন্দ্রে প্রায় ২ হাজার আনসার সদস্য, ১ হাজার পুলিশ, দেড় শতাধিক বিজিবি, র‌্যাব নিয়োজিত থাকবে বলে জানা গেছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার কে.এন. রায় নিয়তী জানান- পীরগঞ্জ পৌরসভার সীমানা নির্ধারন না হওয়ায় পীরগঞ্জ, রামনাথপুর, রায়পুর এবং মেয়াদ পূর্ন না হওয়ায় বড় আলমপুর ইউনিয়নে বর্তমানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ইউএনও এটিএম মাজহারুল ইসলাম বলেন- নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা স্ব স্ব রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(জিকেবি/এএস/মার্চ ২৯, ২০১৬)