প্রবীর সিকদার : সরকারি হাসপাতালের লোকজন ব্যস্ত থাকেন যেন রোগীরা প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যায়। সরকারি ব্যাংকের লোকজন ব্যস্ত থাকেন যেন গ্রাহকরা বেসরকারি ব্যাংকে ভিড় করেন। সরকারি বাসের লোকজন ব্যস্ত থাকেন যেন যাত্রীরা বেসরকারি বাসে চড়ে বসেন।

সরকারি ডাক বিভাগের লোকজন ব্যস্ত থাকেন যেন আমপাবলিক বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসের দরজা চিনে নেয়। সরকারি চিনিকল সংশ্লিষ্টরা ব্যস্ত থাকেন যেন সরকারি চিনি কলের চিনি অবিক্রিত রেখে পচানো যায় আর চিনি আমদানি বা আখ ছাড়াই চিনি উৎপাদন করে লুটেরারা মাল কামায়। সরকারি আমলা বা কামলারা ব্যস্ত থাকেন ডিজিটাল কাজকর্মে ৭৫ পারসেন্ট কমিশন খেয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশকে প্রতিবন্ধী করে রাখতে। সরকারি ফোন বা মোবাইল ফোন কোম্পানির লোকজন ব্যস্ত থাকেন যেন তাদের গ্রাহকরা বেসরকারি ফোনে ঘর ও পকেট ভরে রাখেন। সরকারি ট্যাক্সের লোকজন ব্যস্ত থাকেন যেন আমজনতা সরকারি কোষাগারে কম টাকা ঢেলে তাদের পকেটেই দেন বেশি। সরকারি বিদ্যুৎ গ্যাস আর পানির লোকজন ব্যস্ত থাকেন মিটার কিংবা সংযোগ জটিলতা দেখিয়ে গ্রাহকদের বাধ্য করতে যেন তারা ফিফটি ফিফটি পার্টনারশিপ গড়েন। সরকারি পুলিশ ব্যস্ত থাকেন এটাই বোঝাতে যেন মানুষ খুব সহজেই মনে করেন বাংলাদেশে টাকা ছাড়া কিছুই হয় না। সারাদেশে নানা কারণে বা নানাভাবে হয়রানির শিকার মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বললে এই তালিকা হবে আরও অনেক দীর্ঘ, আরও মর্মান্তিক।

সরকার তথা সাধারণ মানুষের চাকর হয়েও অন্ধকারের নানা মেকানিজমে দেশের মালিক সাধারণ মানুষের বুকে ছুরি মারার এই নৃশংসতা আর কতোদিন চলবে, কে জানে !

(পিএস/অ/এপ্রিল ০৩, ২০১৬)