নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে আর্সেনিক আতঙ্ক নিয়ে তোড়জোড় থেমে গেলেও এখনো ২ কোটি মানুষ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে। নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বুধবার তাদের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।


আর্সেনিক মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়। গ্রামীণ জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও দাবি সংগঠনটির।

‘নেপোটিজম অ্যান্ড নেগলেক্ট : দ্য ফেলিং রেসপন্স টু আর্সেনিক ইন দি ড্রিংকিং ওয়াটার ইন বাংলাদেশ’স রুরাল পোর’ শিরোনামে ১১১ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় আসের্নিক সমস্যা অবজ্ঞা করা হচ্ছে এমনটাই বলা হয়েছে।

একটি গবেষণার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৪৩ হাজার লোক আর্সেনিকের ফলে সৃষ্ট রোগে মারা যান। তবে বাংলাদেশ সরকার ত্বকের ক্ষত দেখে প্রাথমিক অবস্থায় আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করায় অনেকেই কঠিন রোগের হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। ক্যানসার, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ ও ফুসফুস সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি তৈরি করে আর্সেনিক। কিন্তু অনেকে এখনো এসব রোগের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত।

প্রতিবেদনের প্রধান রচয়িতা ও এইচআরডব্লিউ-এর সিনিয়র গবেষক রিচার্ড পেয়ারসহাউস বলেন, ‘লাখ লাখ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে আর্সেনিকমুক্ত পানি পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ স্পষ্টত মৌলিক পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’

‘আসের্নিক সমস্যা একেবারে সমাধান হয়ে গেছে বলে মনে করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার ও দেশটির আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী যদি তাদের মনোভাব পরিবর্তন এবং এ ব্যাপারে আরো বেশি কিছু না করে তাহলে আর্সেনিক সংক্রান্ত রোগে লাখো বাংলাদেশি মারা যাবে’, বলেন পেয়ারসহাউস।

প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, আর্সেনিক প্রকল্পের অর্থ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছানোর আগেই ভাগবাটোয়ারা হয়ে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সরকারি কর্মকর্তাদের পকেটে চলে যায়।

পেয়ারসহাউস বলেন, ‘জীবন বাঁচানোর উপকরণ যাতে জাতীয় ও স্থানীয় রাজনীতিবিদের সমর্থক ও মিত্রদের হাতে না যেতে পারে সেই বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে নিশ্চিত করা উচিত।’

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০৬, ২০১৬)