মাদারীপুর প্রতিনিধি : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দর এলাকায় মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আবুল বাশারের হত্যা মামলার প্রধান আসামি খন্দকার সাইফুর রহমান শাহীনসহ অপর আসামী মহসীনকে গ্রেফতারের ঘটনায় মাদারীপুরে পুলিশ সুপার খোন্দকার ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আসামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে বলেছে ২০১১ সালের ২২ জুন ফরিদপুর সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আসামী খন্দকার সাইফুর রহমান শাহীন ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী দেলোয়ার কাজী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নিবার্চন করেন। নির্বাচনে উভয়ই হেরে যান। হেরে গেলেও নির্বাচনে দেলোয়ার কাজীর চেয়ে শাহীন দ্বিগুণ ভোট পাওয়ায় দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

হত্যার প্রায় ১ মাস আগে দেলোয়ার কাজীর লোকজন মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আবুল বাশারের নেতৃত্বে শাহীনের ঘর-বাড়ী ভাংচুর করে। একই দিন শাহীন গ্রুপের সদস্য মিন্টুকে মারধর করে। এই ঘটনায় শাহীন সালথা থানায় মাওলানা আবুল বাশারকে ১নং আসামী করে মামলা করেন। এনিয়ে শাহীন ও আবুল বাশারের মধ্যে চরম দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাহীন ৩ লাখ টাকা দিয়ে ভাড়াটে খুনি ঠিক করে আবুল বাশারকে হত্যা করার জন্য। শাহীন ভাড়াটে খুনিদের অগ্রিম ৩০ হাজার টাকা দেয়। খুনিরা প্রায় ২০/২৫ দিন আগে থেকেই আবুল বাশারকে হত্যার জন্য অনুসরণ করতে থাকে।

ঘটনার দিন ৩১ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে টেকেরহাট এলাকার মিল্ক ভিটা রোডে খুনিরা তাকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় খুনিরা হত্যাকান্ডে সহযোগি বিল্লালকেও হত্যা করে।

সোমবার সকালে ঢাকা মহাখালীর নীহা আবাসিক হোটেল থেকে জোড়া খুনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি খন্দকার সাইফুর রহমান শাহীনকে র‌্যাব-২ গ্রেফতার করে। এছাড়াও মহসীন নামের এক আসামীকে ঘটনার পরেরদিন পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার খোন্দকার ফরিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাল, সহকারী পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ৩১ মে রাতে টেকেরহাট বন্দরের মিল্কভিটা রোডে প্রথমে মাওলানা বাশার ও পরে হত্যার সহযোগী বিল্লাল হোসেনকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে খুনিরা।

(এএসএ/অ/জুন ০৪, ২০১৪)