স্পোর্টস ডেস্ক, ঢাকা : চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের টুর্নামেন্টে (২০১০) গ্রুপ পর্বেই বাদ। ইতালির আগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের আসরের প্রথম রাউন্ডে বিদায় নিয়েছিল মাত্র ২টি দল (ব্রাজিল-১৯৬৬, ফ্রান্স-২০০২) । ভুতুড়ে পারফরমেন্স দেখিয়ে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল ৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। ইতালি দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে একটি ম্যাচেও জয় পায়নি। ইতালির ফুটবল ইতিহাসে এমন ঘটনার নজির ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে যে ভুত ইতালির মাথায় সওয়ার হয়েছিল। সেই ভুতকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে চাইবেন কোচ সিজার প্রানদেল্লি।

আজ্জুরিরা এবার ব্রাজিলে এমন কিছু না করার চেষ্টা করবে ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করা। কিন্তু বাস্তবতা অনেক কঠিন। কারণ গ্রুপ অফ ডেথে তাদের অবস্থান। ইতালির গ্রুপ ‘ডি’। এই গ্রুপে রয়েছে উরুগুয়ে, ইংল্যান্ড ও কোস্টারিকা। ফলে সেরা দুইয়ে থাকাটা ইতালির জন্য চ্যালেঞ্জের। নকআউট রাউন্ডে ইতালি যাবে কি না, এটা একটা প্রশ্নও বটে। তবে দারুণ লড়াই হবে এটা নিশ্চিত। কারণ গ্রুপের ৩টি দেশই বিশ্বকাপের সাবেক চ্যাম্পিয়ন।

ইতালি সম্প্রতি ভালো ফুটবল খেলছে। ২০১২ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছিল তারা। ২০১৩ কনফেডারেশন্স কাপে তৃতীয়স্থান অধিকার করে দলটি।

লিওনেল মেসি বা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো মহাতারকা ইতালির দলে নেই। কিন্তু দলীয় শক্তিতে ইতালিকে পিছিয়ে রাখা যাচ্ছে না।

২০০৬ বিশ্বকাপে ইতালি ফেভারিটের তালিকায় থাকলেও শীর্ষে ছিল না দলটি। সবাইকে বিস্ময় উপহার দিয়ে অপ্রতিরোধ্য ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করেছিল দলটি।

২০১২ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপেও ইতালি সবাইকে চমকে ফাইনালে উঠেছিল। এবারও সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয় করেছে ব্রাজিল (৫ বার)। ইতালি সফলতার বিচারে দ্বিতীয়স্থানে (৪ বার)। পঞ্চম শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে তারা। সফল হলে ব্রাজিলকে ছুঁয়ে ফেলবে তারা।

এক নজরে ইতালির

চ্যাম্পিয়ন- ১৯৩৪, ১৯৩৮, ১৯৮২, ২০০৬।

রানার্সআপ- ১৯৭০, ১৯৯৪

তৃতীয়স্থান- ১৯৯০

চতুর্থ- ১৯৭৮

বিশ্বকাপে ইতালির অংশগ্রহণ- ১৭ বার

সর্বশেষ শিরোপা (ফিফা)- ২০০৬ বিশ্বকাপ

সর্বশেষ টুর্নামেন্ট (ফিফা) – ২০১৩ কনফেডারেশন্স কাপ।

সাবেক তারকা- ডিনো জফ, পাওলো মালদিনি, সিলভিও পিওলা।

এই ইতালি

২০১০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়ার পর ইতালির কোচ মার্সেলো লিপ্পি পদত্যাগ করেছেন। লিপ্পির স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন প্রানদেল্লি। লিপ্পির অধীনে ২০০৬ সালে বিশ্বকাপ জয় করেছিল তারা। বর্তমানে ইতালিকে পরিকল্পনার খাতায় রাখবে সবাই। যদিও জমাট সেই রক্ষণভাগ তাদের নেই। কিন্তু তারপরও আজ্জুরিদের রুখে দেওয়াটা কঠিন। সর্বশেষ কনফেডারেশন্স কাপেও তারা সেটা প্রমাণ করেছে।

ফিফা র‌্যাঙ্কিং- ৯

গ্রুপ : ডি

ইতালি, ইংল্যান্ড, উরুগুয়ে ও কোস্টারিকা

বর্তমান কোচ : সিজার প্রানদেল্লি

ফরমেশন ও কৌশল : ইতালির কোচ সিজার প্রানদেল্লি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ফরমেশনে ব্যাপক পরিবর্তন করেছে। টুর্নামেন্টে ৪-৩-১-২ ফরমেশন ছিল ইতালির। তবে এবার সবাইকে চমকে দিয়ে ইতালি ৪-৫-১ ফরমেশন দিয়ে ব্রাজিল জয় করতে চাইতে পারে। কনফেডারেশন্স কাপে তারা ৪-৩-৩ এ খেলেছিল। তবে ইতালির রক্ষণভাগ আগের চেয়ে শক্তিশালী না হলেও আক্রমণভাগ আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী।

ইনজুরি : বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় রিকার্দো মন্তোলিভো ইনজুরিতে পড়েছেন। তার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে। জিওসেপ্পে রসি ফিটনেস না থাকায় দলে জায়গা করে নিতে পারেননি।

ইতালির চমক ও প্রত্যাশা : প্যারিস সেইঁ জার্মেইয়ের মার্কো ভেরাত্তি ও এসি মিলানের মারিও বালোতেল্লি ইতালিকে সফলতা এনে দিতে পারেন। ইউরোপের শক্তিশালী দলটির প্রত্যাশা অবশ্যই বিশ্বকাপ।

যারা যে ভূমিকায় : ইতালির আক্রমণভাগে রয়েছেন বালোতেল্লি, কাসানো, সার্সি, ইম্মোবিল ও ইনসাইন। আন্দ্রে পিরলো ও থিয়াগো মোতা মাঝমাঠ সামলাবেন। ডি রসিও রয়েছেন। ডিফেন্সে চিল্লিনি তো রয়েছেন। আর গোলবার আগলে রাখবেন বুফন।

প্রানদেল্লির বক্তব্য :

‘আমরা জানি গ্রুপটা কঠিন। প্রথম লক্ষ্য দ্বিতীয় রাউন্ড। এরপর আমরা অন্য কিছু ভেবে দেখব।’

(ওএস/পি/জুন ০৪,২০১৪)