লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : যোগদানের ১১ দিনের মাথায় উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বদলী করায় লোহাগড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়েছে । মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে দু’জন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বদলী করায় শিক্ষকদের বেতন ও বিভিন্ন বিল আটকে আছে। থেমে গেছে সব ধরণের বদলী কার্যক্রম। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এহেন দায়িত্বহীন আদেশের কারনে এ  অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে লোহাগড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে হ-য-র-ল-ব অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা গেছে,নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় মোট ১৫৮ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ৬টি ক্লাস্টারে ভাগ করে উপজেলার শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ওই ৬ ক্লাস্টারে ৫ জন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বর্তমানে কর্মরত। গত ২৩ এপ্রিল উপজেলা শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণপদ সরকারকে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলায় বদলী করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হাসি রাণী ব্যাপারী শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে অপর সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের কেউই এ দায়িত্ব পালন করতে আগ্রহ প্রকাশ না করায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার আসনটি শুন্য থাকে। ফলে থেমে যায় দাপ্তরিকসহ শিক্ষকদের যাবতীয় কার্যক্রম। ১ মাস শুন্য থাকার পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এই পদে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থেকে প্রনব কুমার মল্লিককে বদলীর আদেশ প্রদান করে। বদলীর আদেশ পাওয়ার পর ওই শিক্ষা কর্মকর্তা অধিদপ্তরে বদলীর আদেশ স্থগিত করার জন্য দেন দরবার শুরু ও নতুন কর্মস্থলে যোগদানে গড়িমসি করে। অবশেষে ২২ মে প্রনব কুমার মল্লিক লোহাগড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করেন। যোগদানের পর উপজেলায় দাপ্তরিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করে। যোগদানের ১১ দিন পর সোমবার(২জুন)বিকালে শিক্ষা অফিসার প্রনব কুমার মল্লিক কাউকে কিছু না জানিয়ে দুপুরের খাবার খেতে বেরিয়ে যান। পরবর্তীতে তার সেলফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে প্রনব কুমার মল্লিককে বদলী করা হয়েছে। এদিকে,উপজেলা শিক্ষা অফিসার না থাকায় অভ্যন্তরীণ,আন্ত:জেলা, আন্ত:বিভাগ বদলী কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সর্বশেষ বদলী নীতিমালা অনুযায়ী ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বদলী কার্যক্রম সম্পন্ন করতে লিখিত আদেশ প্রদান করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কারনে অধিদপ্তর বদলী কার্যক্রম স্থগিত করে। পরে ১৫ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বদলী কার্যক্রম চালু করার জন্য অধিদপ্তর নির্দেশ দেয়। ১ মাসের ব্যবধানে দু’জন শিক্ষা অফিসারকে বদলী ও ইতিমধ্যে দেড়মাস অতিবাহিত হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে সময় মতো বদলী কার্যক্রম শেষ করা নিয়ে আশংকা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষা অফিসার প্রনব কুমার মল্লিকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোনটি(০১৭২৭৪৭২২৮৬) বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জেছের আলী অফিসার বদলীর কারনে দাপ্তরিক কার্যক্রম বিঘিœত হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, মঙ্গলবার বিকালে ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বদলীর আদেশ পেয়েছি। জরুরীভাবে লোহাগড়ায় শিক্ষা কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য ঊর্দ্ধতনকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হবে।
(আরএম/এএস/জুন ০৫, ২০১)