মাদারীপুর প্রতিনিধি : মদারীপুর সদর হাসপাতালে ৬ষ্ঠ দিনেও বর্হিবিভাগ বন্ধ আছে। সেই সাথে বন্ধ আছে বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরণের কেন্দ্র। কবে নাগাদ এইসব কার্যক্রম চালু হবে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছে, চিকিৎসক লাঞ্ছিতের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে হাসপাতালের বর্হিবিভাগের কার্যক্রম কোনমতেই শুরু হবে না।

আর এতে করে অসহায় ও গরীব রোগিরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। তাদের দাবী, বেশি টাকা দিয়ে ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার মতো সামর্থ্য তাদের নেই। তাই দ্রুত হাসপাতালের বর্হিবিভাগের কার্যক্রম চালুর দাবী জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার দাসের অফিস রুমে গেলে আজও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি অফিসের কাজে ঢাকায় আছেন। আগামী সোমবার তাকে পাওয়া যাবে বলে সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

তবে মোবাইল ফোনে সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার দাস বলেন, ‘চিকিৎসকদের লাঞ্ছিতের ঘটনা খুবই ন্যক্কারজনক। তাই এর প্রতিবাদে চিকিৎসকরা বহির্বিভাগ বন্ধ রেখেছে। আগামী শুক্রবার এর মধ্যে দোষিরা গ্রেফতার না হলে উপরস্ত মহলের সাথে আলোচনা সভা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
সরেজমিন, স্থানীয়, হাসপাতাল ও রোগী সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার থেকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ রয়েছে। সেই সাথে বিনামূল্যে ঔষুধ বিতরণের কেন্দ্রও বন্ধ রয়েছে। তবে ভর্তি থাকা রোগিদের চিকিৎসা ও জরুরী বিভাগে চিকিৎসা সেবা চলছে।

সদর উপজেলার খাগদী গ্রামের রোকসানা আক্তার তার অসুস্থ্য শিশুকে বুধবার সকালে হাসপাতালের চিকিৎসা জন্য নিয়ে আসেন। কিন্তু বর্হিবিভাগ বন্ধ থাকায় চিকিৎসা নেয়া সম্ভব হয়নি। তাই সে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ভেবেছি আমার অসহায়ের কথা ডাক্তারদের বললে তারা হয়তো আমার ছেলেকে ভর্তি নিবে। কিন্তু আমি ভাবতেই পারিনি তারা আমাকে এভাবে ফিরিয়ে দেবে। আমাকে তারা অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিল। আর কোন অনুরোধই তারা শুনলো না। সরেজমিনে এমন উদাহরণ আরো কয়েকটি চোখে পড়েছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোর রাতে মাদারীপুর শহরের কলেজ রোড এলাকার লাল মিয়া শিকদারের স্ত্রী রেনু বেগমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ঐ রোগী মারা যায়। এই ঘটনায় রোগীর আত্মীয় স্বজন কর্তব্যরত চিকিৎসক খন্দোকার মাইনুল হাসানের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে। অপরদিকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ এনে চিকিৎসকরা শুক্রবার থেকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে ধর্মঘট শুরু করে।

(এএসএ/এএস/এপ্রিল ২৭, ২০১৬)