ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি:মেয়ের বিয়ের জন্য ব্যাংকে জমিয়ে রাখা ৫০ হাজার টাকা না দেওয়ায় মাদকাসক্ত পাষন্ড স্বামী পেট্রল ঢেলে স্ত্রীর গায়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঈশ্বরদীর দিয়াড় বাঘইল গ্রামে।

এই পাষন্ড স্বামীর নাম সাহাবুল হোসেন (৪০)। এই মর্মান্তিক ঘটনায় গার্মেন্ট কর্মী ওই গৃহবধূ
সালমা খাতুনের (৩৩) শরীরের ৯০ ভাগই আগুনে ঝলসে গেছে। তিনি এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদীর দিয়াড় বাঘইল রেললাইন সংলগ্ন ইউপি কার্যালয়ের পেছনের এলাকায় মৃত মোজাহার আলীর ছেলে মাদকাসক্ত সাহাবুল হোসেন বসবাস করে। ঈশ্বরদীর বাঘইল পূর্বপাড়া সাাঁকো এলাকার নূরা ঘরামির মেয়ে সালমা খাতুনের সাথে তার বিয়ে হয়। সালমা খাতুল ইপিজেডের একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করে। সালমা তার মেয়ে শারমিনের বিয়ে দেওয়ার জন্য নিজের উপার্জিত ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে জমিয়ে রেখেছিল পাষন্ড স্বামী সাহাবুল ওই টাকা ব্যাংক হতে উঠিয়ে তাকে দেওয়ার জন্য স্ত্রী সালমাকে প্রায়ই চাপ প্রয়োগ করতো। এলাকাবাসীরা জানায়, টাকা না দেয়ায় সাহাবুল মাঝে মঝেই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো। এরপরও সালমা টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় রোববার রাতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফাঁকি দিয়ে বাড়ির বাইরের একটি গাছতলায় নিয়ে এসে মুখ ও হাত বেঁধে ফেলে এবং তার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় সালমার আর্ত চিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এখানে আগুনে
পোড়া রুগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

গৃহবধূ সালমাকে উদ্ধার করতে আসা জীবন হোসেন জানান, আগুনে তার পুরো শরীর ঝলসে
গেছে। রাজশাহীতে অবস্থানরত সালমার পরিজন জানান, চিকিৎসকরা এখনো তার অবস্থা আশংকামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন। তার শরীরের বেশীরভাগ অংশ পুড়ে গেছে বলে তিনি জানান।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিমান কুমার দাশ জানান, এ ঘটনার পর পুলিশ এলাকা পরিদর্শন করেছে, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা রেকর্ড করা হবে। এ ঘটনার পর হতে সাহাবুল এলাকা থেকে পালিয়েছে, সোমবার দুপুরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সাহাবুলের বাড়ি ও দোকান ভাংচুর করেছে।

এলাকাবাসী জানান, সাহাবুল একজন মাদকাসক্ত এবং বাজে প্রকৃতির লোক। কিছুদিন
আগে প্রতিবেশি এক নারীকে শারীরিক নির্যাতন করার অপরাধে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল।

(এসকেকে/এস/মে০২,২০১৬)