শেরপুর প্রতিনিধি : ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেরপুরের বর্ষীয়ান রাজনীতিক মো. আব্দুর রশীদ (৮৪) আর নেই। ৫ জুন বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে তিনটায় শহরের গৃর্দানারায়ন এলাকার নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন। বেশ কিছুদিন যাবত তিনি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনী ও লিভার সংক্রান্ত জটিলতায় শয্যাশায়ী ছিলেন।

বিকেলে শহরের শহীদ দারোগ পার্ক মাঠে নামাজে জানাযা শেষে চাপাতলি পৌর কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। এর আগে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকীর হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করেন। এদিকে, দুপুর একটা থেকে দুইটা পর্যন্ত তাঁর মরদেহ চকবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হলে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিঁনি একপুত্র, তিন কন্যা রেখে গেছেন। তাঁর একমাত্র ছেলে অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম বাদল এটিএন বাংলা, দৈনিক যুগান্তর ও বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকমের শেরপুর প্রতিনিধি।
তাঁর মৃত্যুতে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, পৌর মেয়র হুমায়ুন কবীর রুমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন, চেম্বার সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বর্ষিয়ান রজানীতিক আব্দুর রশীদ ১৯৩১ সালের ২৫ জানুয়ারি শেরপুর পৌর শহরের শেখহাটিতে এক সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া একাডেমীতে অধ্যয়নকালে ছাত্রাবস্থায় তিঁনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট, ৬২’র শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যূত্থান, ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে অবদান রাখেন। এ ছাড়া স্বাধীনতার পরে বিভিন্ন গনতান্ত্রিক, সাংস্কৃতিক ও প্রগতিশীল আন্দোলন এবং শেরপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডেও অবদান রেখেছেন। শেরপুরের কুখ্যাত আল বদর জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই প্রতিবাদী ভুমিকা পালন করেন এবং যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানকে সামাজিকভাবে বয়কট করে শেরপুরে এক অন্যন্য নজির স্থাপন করেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শেরপুর জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

(এএইচবি/এএস/জুন ০৫, ২০১৪)