সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি : স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার কারণে পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছি। স্কুল শিক্ষক ও এলাকার লোকজনের কাছে বিচার চেয়েও আমি কোন বিচার পাইনি। আমার আব্বু একজন সাধারণ কৃষক হওয়ার কারণে কেউ আমাকে সহযোগীতা করেনি। কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয়ে পড়ালেখা বন্ধ করেও রক্ষা পাচ্ছিনা।

গত ১ মে বিকাল ৪টার দিকে ৫-৬জন সন্ত্রাসী আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমার আব্বু ও ভাইদেরকে মারধর করে। ঘরে ঢুকে জিসিনপত্র ভাঙচুর করে। আমাকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমার আত্ম-চিৎকার শুনলে লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রীরা পালিয়ে যায়।

এসকল কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মোল্লা বাড়ির সফিকুর রহমানের মেয়ে মনি। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, ২০০২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন বিবি মারজান মনি (১৪)। ৮ ভাই-বোনের মধ্যে মনি সবার ছোট। রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিবেশি আফছারের ছেলে লিপ্টন প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দেওয়ায় প্রাথমিকের পাঠ শেষ করার আগেই পড়ালেখা বন্ধ করতে হয় কিশোরী মনিকে। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেও লিপ্টনের বখাটেপনার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না মনি। দুই সন্তানের জনক লিপ্টন (৩২) মনিদের বাড়ির আশেপাশে সন্ত্রাসীদের নিয়ে ঘোরাফেরা করত নিয়মিত। তার ভয়ে বাড়িতে নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না মনি ও তার পরিবার।

সর্বশেষ গত ১ মে বিকেলে ৫-৬ জন সন্ত্রাসী নিয়ে মনিদের বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর করে মনিকে অপহরণের চেষ্টা চালায় সন্ত্রাসী লিপ্টন। এ সময় বাধা দিতে আসলে মনির বাবা ও ভাইকে পিটিয়ে আহত করে লিপ্টন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। মনির চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে লিপ্টন তার দলবল নিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে মনির বাবা সফিকুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে দাগনভূঁঞা থানায় মামলা করেছি। তবে আমরা এখনো আতঙ্কে আছি। লিপ্টনের সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে এলাকার লোকজনও প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দানগভুঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আছলাম উদ্দিন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।

(এসএমআই/এএস/মে ০৬, ২০১৬)